পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যুদ্ধ

 সেনানী আবার চীৎকার ক’রে বললে, “ওদিকে নয়— ওদিকে নয়! আমাদের পিছন দিকে তাকিয়ে দেখুন!”

 সচমকে ঘোড়া ফিরিয়ে সেনাপতি মহা বিস্ময়ে দেখলেন, কুরুক্ষেত্রের প্রান্তরে যেখানে গ্রীক সৈন্যরেখা শেষ হয়েছে সেখান থেকে আরো খানিক দূরে আত্মপ্রকাশ করেছে, মস্ত একদল পল্টন! দেখতে দেখতে প্রান্তরের শূন্যতা অধিকতর পূর্ণ হয়ে উঠছে এবং সেই বিপুল বাহিনীর আকার হয়ে উঠছে বৃহত্তর! সেই বহুদূরব্যাপী সৈন্য-স্রোতের যেন শেষ নেই!

 রুদ্ধশ্বাসে সেনাপতি বললেন, “সিসিকোটাস্, ওরা কারা?— শত্রু না মিত্র?”

 শশীগুপ্ত স্তম্ভিত কণ্ঠে বলিলেন, “সেনাপতি ওরা আমাদের মিত্র নয়! দেখছেন না, ওদের মাথার উপরে উড়ছে মহারাজা পুরুর পতাকা?”

 দাঁতে দাঁত ঘ’ষে তীব্র স্বরে সেনাপতি বললেন, “বিশ্বাসঘাতক পোরাস্!”

 শশীগুপ্ত সভয়ে বললেন, “দেখুন সেনাপতি! আমাদের পিছনের সৈন্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালাতে শুরু করেছে! আবার এদিকেও দেখুন, চন্দ্রগুপ্তের ব্যূহের দুই পাশ থেকে রথারোহী গজারোহী আর অশ্বারোহীর দলও অগ্রসর হয়ে আমাদের দুই পাশ আক্রমণ করতে আসছে। আমরা ফাঁদে ধরা পড়েছি—আর আমাদের বাঁচোয়া নেই!”

 নিষ্ফল আক্রোশে কপালে করাঘাত ক’রে গ্রীক সেনাপতি বললেন, “মূর্খ, আমরা হচ্ছি মূর্খ´! এইবারে বুঝলুম, ঐ ভারতীয় বর্বররা কেন এতক্ষণ ধ’রে কেবল আমাদের আক্রমণ সহ্য করছিল। ওরা এতক্ষণ ধ’রে পোরাসেরই অপেক্ষায় ছিল! ওরা জানত পোরাস্ আস্‌ছে আমাদের পিছনদিক আক্রমণ করতে! এর জন্যে তুমিই

১০৭