পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দ্বাদশ পরিচ্ছেদ

রাজার ঘোড়ার সওয়ার

 কিন্তু আনন্দের এই মাহেন্দ্রক্ষণে ভারত-বন্ধু সুবন্ধুকে কেউ দেখতে পেলে না। রক্তসিক্ত কুরুক্ষেত্রের প্রান্তর পার হয়ে তার অশ্ব বায়ুবেগে ছুটে চলেছে এক অরণ্য-পথ দিয়ে।

 এবং তার খানিক আগে আগে তেমনি বেগে ঘোড়া ছুটিয়েছে আর একজন সওয়ার! দেখলেই বোঝা যায়, সে সুবন্ধুর নাগালের বাইরে যেতে চায়!

 কিন্তু সুবন্ধুর ঘোড়া বেশী তেজীয়ান—এ যে সেই রাজার ঘোড়া! প্রতিমুহূর্তেই সে অগ্রবর্তীর বেশী কাছে এগিয়ে যাচ্ছে।

 হঠাৎ সুবন্ধু তার ভল্ল তুললে। লক্ষ্য স্থির ক’রে অস্ত্র ত্যাগ করলে এবং সেই তীক্ষ্ণধার ভল্ল প্রবেশ করলে অগ্রবর্তী অশ্বের উদরদেশে।

 আরোহীকে নিয়ে অশ্ব হ’ল ভূতলশায়ী। অশ্ব আর উঠল না, কিন্তু আরোহী গাত্রোখান ক’রে দেখলে, ঠিক তার সমুখেই ঘোড়ার পিঠ থেকে লাফ মেরে নেমে পড়ল সুবন্ধু!

 অশ্বহীন আরোহী বললে, “যুদ্ধে আমরা পরাজিত। আমি পলাতক। তবু তুমি আমার অনুসরণ করছ কেন?”

 সুবন্ধু হা-হা রবে অট্টহাসি হেসে বললে, “আমি তোমার অনুসরণ করছি কেন? শশীগুপ্ত, সে কথা কি তুমি বুঝতে পারছ না?”

 —“না।”

১১০