পল্টনের পাকা ঘোড়-সওয়াররা শিশুর মুখ-সাবাসি শুনে সকৌতুকে অট্টহাস্য ক’রে উঠল।
ফিলিপ বললেন, “বেশ, চেষ্টা ক’রে দেখো।”
আলেকজাণ্ডার ঘেড়ার দিকে এগিয়ে গেলেন। তিনি এতক্ষণ ধ’রে লক্ষ্য করছিলেন যে, মাটির উপরে নিজের ছায়া দেখেই ঘোড়াটা চম্কে চম্কে উঠছে! তিনি প্রথমে পিঠ চাপড়ে তাকে আদর করলেন। তারপর লাগাম ধ’রে ঘোড়ার মুখটা সূর্যের দিকে ফিরিয়ে দিলেন, কাজেই সে আর নিজের ছায়া দেখতে পেলে না। তারপর অনায়াসেই ঘোড়ার পিঠে চ’ড়ে তাকে যথেচ্ছ ভাবে চারিদিকে ছুটোছুটি করিয়ে আনলেন ৷
বুড়ো বুড়ো সেপাই-সওয়ারদের মুখ চূণ, মাথা হেঁট!
ফিলিপ প্রথমটা বিস্ময়ে অবাক হয়ে রইলেন, তারপর অভিভূত স্বরে আলেকজাণ্ডারকে ডেকে বললেন “বাছা, নিজের জন্যে তুমি মস্ত কোনো রাজ্য জয় করো, আমার এ ক্ষুদ্র মাডিসন তোমার যোগ্য নয়!”
ফিলিপ সেইদিনই বুঝতে পেরেছিলেন, তাঁর ছেলে বড় সহজ ছেলে নয়! তাঁর অনুমানও সত্য হয়েছিল। কারণ ঐ ষণ্ডমুণ্ডেরই পিঠে চ’ড়ে আলেকজাণ্ডার পরে সারা বিশ্ব জয় করেছিলেন।
আজ শিবিরের বাইরে সেই ষণ্ডমুণ্ডই মাঝে মাঝে হ্রেষা-রব ক’রে তার প্রভুকে জানিয়ে দিচ্ছিল যে, এতক্ষণ ধ’রে তাকে ভুলে থাকা উচিত নয়—মনিবকে পিঠে নিয়ে মাঠে-বাটে ছুটোছুটি করবার জন্যে তার পাগুলো নিস্পিস্ করছে যে! কিন্তু আলেকজাণ্ডার কাব্যরসে মগ্ন হয়ে তখন অন্য জগতে গিয়ে পরেছেন—কল্পনাকে বিচরণ করা ছিল তাঁর চিরদিনের স্বভাব। এই কল্পনাই দেখিয়েছে তাঁকে বিশ্বজয়ের স্বপ্ন!
কল্পনা চিরদিনই প্রত্যেক মানুষকে স্বপ্ন দেখায়। কিন্তু শতকরা নিরানব্বই জন লোক কেবল স্বপ্ন দেখেই খুসি থাকে, সেই স্বপ্নকে