আলেকজাণ্ডারের হাতে রয়েছে একটি চিত্রিত পানপাত্র, সেটির গড়ন ষাঁড়ের মাথার মতন। সামনেই দুটি সুন্দরী মেয়ে মিষ্টি সুরে বাঁশী বাজাচ্ছে এবং আর একটি রূপসী মেয়ে তারই তালে তালে করছে নৃত্য। আলেকজাণ্ডার মদ্যপান করতে করতে একমনে নাচ দেখছেন।—প্রাচীন গ্রীকরা নাচ-গান বড় ভালোবাসত।
সুগন্ধ জলে পূর্ণ পাত্র নিয়ে দলে দলে রাজভৃত্য দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেই জলে হাত ধুয়ে অতিথিরা আসন গ্রহণ করছেন। তাঁরা তরকারি বা ঝোল মাখা হাত মুছবেন ব’লে প্রত্যেক টেবিলেই নরম রুটি সাজানো রয়েছে। রুটিতে হাত মোছবার নিয়ম য়ুরোপে সেদিন পর্যন্ত ছিল।
হঠাৎ আলেকজাণ্ডারের দৃষ্টি ক্লিটাসের দিকে আকৃষ্ট হ’ল। ক্লিটাস্ গম্ভীর ভাবে কৌচের উপরে ব’সে আছেন। তাঁর মুখে কালো ছায়া।
আলেকজাণ্ডার বললেন, “বন্ধু, অমন মুখ গোম্রা ক’রে ভাবছ কি?”
ক্লিটাস্ তিক্ত হাসি হেসে বললেন, “ভাবছি কি? ভাবছি আজ তুমি কি অভিনয়টাই করলে!”
ভুরু কুঁচ্কে আলেকজাণ্ডার বললেন, “অভিনয়?”
—“হাঁ, হাঁ, অভিনয়! তোমার চমৎকার অভিনয়ে নির্বোধ সৈন্যরা ভুলে গেল বটে, কিন্তু আমি ভুলি নি। নিজের যশ বাড়াবার জন্যে তুমি চলেছ ভারতবর্ষের দিকে, আর তোমার যশ বাড়াবার জন্যে আমরা চলেছি সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখে!”
আত্মসংবরণ করবার জন্যে আলেকজাণ্ডার আবার মদ্যপান ক’রে অন্যমনস্ক হবার চেষ্টা করলেন, কারণ তাঁর রাগী মেজাজ তখন গরম হয়ে উঠেছে। ক্লিটাস্ তাঁর প্রিয়তম বন্ধু বটে, কিন্তু ভুলে যাচ্ছে তিনি সম্রাট!
২৩