পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চনদের তীরে

দেখলেন, ক্লিটাসের নিঃসাড় নিস্পন্দ দেহের উপর দিয়ে ঝলকে ঝলকে রক্তের স্রোত বয়ে যাচ্ছে!

 দেখতে দেখতে আলেকজাণ্ডারের নিষ্পলক বিস্ফারিত চক্ষু অশ্রুঞ্জলে পরিপূর্ণ হয়ে গেল এবং তারপরেই শিশুর মতন ব্যাকুল ভাবে কাঁদতে কাঁদতে তিনি ব’লে উঠলেন, “ক্লিটাস্—ভাই, আমার জীবন-রক্ষক! কথা কও বন্ধু, কথা কও!”

 কিন্তু ক্লিটাস্ আর কথা কইলেন না।

 ক্লিটাসের বুকে তখনও বর্শাটা বিঁধে ছিল। আলেকজাণ্ডার হঠাৎ হেঁট হয়ে প’ড়ে বর্শাটা দুই হাতে উপ্‌ড়ে তুলে নিয়ে নিজের বুকে বিদ্ধ করতে উদ্যত হলেন।

 একজন দেহরক্ষী এক লাফে কাছে গিয়ে বর্ণাশুদ্ধ তাঁর হাত চেপে ধরলে। সেনাপতিরাও চারিদিক থেকে হাঁ-হাঁ ক’রে ছুটে এলেন।

 আলেকজাণ্ডার ধ্বস্তাধ্বস্তি করতে করতে পাগলের মতন ব’লে উঠলেন, “না—না! আমাকে তোমরা ছেড়ে দাও! যে বন্ধু আমার প্রাণ বাঁচিয়েছে, আমি তাকেই হত্যা করেছি! আমি মহাপাপী! আমার মৃত্যুই শ্রেয়!”

 প্রধান সেনাপতি বৃদ্ধ পার্মেনিও, তিনি আলেকজাণ্ডারের পিতা রাজা ফিলিপের আমলের লোক। তিনি এগিয়ে এসে বললেন, “বাছা আলেকজাণ্ডার, তুমি ঠাণ্ডা হও। যা হয়ে গেছে তা শোধ্‌রাবার আর উপায় নেই। তুমি আত্মহত্যা করলে কোনই লাভ হবে না।”

 আলেকজাণ্ডার কাতর স্বরে বললেন, “আত্মহত্যা ক’রে আমি ক্লিটাসের কাছে যেতে চাই।”

 পামেনিও বললেন, “তুমি আত্মহত্যা করলে গ্রীসের কি হবে? এই বিপুল সৈন্যবাহিনী কে চালনা করবে? কে জয় করবে দুর্ধর্ষ

২৬