পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চনদের তীরে

যাবো কেন? যাও সুবন্ধু, এখনি তক্ষশীলা ছেড়ে চ’লে যাও, নইলে আমার বন্ধু, সম্রাট আলেকজাণ্ডারের শত্রু ব’লে তোমাকে বন্দী করবো।’ আমি আর কিছু না ব’লে একেবারে আপনার রাজ্যে উপস্থিত হয়েছি। এখন আপনার অভিমত কি মহারাজ?”

 হস্তী একটি দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ ক’রে বললেন, “আমার অভিমত? যথাসময়ে শুনতে পাবে।......মন্ত্রী-মহাশয়, আলেকজাণ্ডার যে পারস্য জয় ক’রে দিগ্বিজয়ে বেরিয়েছেন, সে খবর আমরা আগেই পেয়েছিলুম। কিন্তু তাঁর সেনাপতিরা যে এত শীঘ্র ভারতে প্রবেশ করেছেন, এ খবর আপনি রাখেন নি কেন? আমার রাজ্যে কি গুপ্তচর নেই?”

 মন্ত্রী লজ্জিত স্বরে বললেন, “মহারাজ, একচক্ষু হরিণের মতো আমাদের দৃষ্টি সজাগ হয়ে ছিল কেবল খাইবার গিরিসঙ্কটের দিকেই, কারণ বহিঃশত্রুরা ঐ পথেই ভারতে প্রবেশ করে। যবন সৈন্যরা যে নতুন পথ দিয়ে ভারতে আসবে, এটা আমরা কল্পনা করতে পারি নি!”

 হস্তী বিরক্তস্বরে বললেন, “এ অন্যমনস্কতা অমার্জনীয়। আচ্ছা সুবন্ধু, তুমি বললে আলেকজাণ্ডার তাঁর দুই সেনাপতিকে এদিকে পাঠিয়েছেন। কিন্তু তিনি নিজে এখন কোথায়?”

 —“মহারাজ, আলেকজাণ্ডার নিজে তাঁর প্রধান বাহিনী নিয়ে সীমান্তের পার্বত্য রাজাদের দমন করতে গিয়েছেন।”

 —“হুঁ! দেখছি এই যবন-সম্রাট রণনীতিতে অত্যন্ত দক্ষ। এরি মধ্যে সীমান্তের পার্বত্য রাজাদের মতি-গতি তিনি বুঝে নিয়েছেন! এই যুদ্ধপ্রিয় বীরদের পিছনে রেখে ভারতে ঢুকলে যে সর্বনাশের সম্ভাবনা এ সত্য তিনি জানেন।”

 সেনাপতি জিজ্ঞাসা করলেন, “সুবন্ধু, যবন-সম্রাটের অধীনে কত সৈন্য আছে?”

 —“কেউ বলছে এক লক্ষ, কেউ বলছে লক্ষাধিক। আমার

৫৬