কিন্তু তিন দিন পরে সুবন্ধুর কাছে মহারাজা হস্তীকে মতামত প্রকাশ করতে হ’ল না।
চতুর্থ দিনের প্রভাতে মহারাজ। যখন রাজকার্যে ব্যস্ত, রাজসভার মধ্যে হ’ল গ্রীকদের এক ভারতীয় দূতের আবির্ভাব।
মহারাজা হস্তী দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ ক’রে মুখ তুললেন। প্রশস্ত ললাট চিহ্নিত হ’ল চিন্তার রেখায়। কিন্তু সঙ্কুচিত ধনুকের মতো যুগ্ম-ভুরুর তলায় চক্ষে যেন জাগল তীক্ষ্ণ অগ্নিবাণ—মুহূর্তের জন্যে। তার পরেই মৃদুহাস্য ক’রে বললেন, “কি সংবাদ, দূত?”
—“সমগ্র গ্রীস ও পারস্যের সম্রাট আলেকজাণ্ডার এসেছেন অতিথিরূপে ভারতবর্ষে। আপনি কি তাঁকে অভ্যর্থনা করতে প্রস্তুত আছেন?”
—“দূত, তুমি হিন্দু। তুমি তো জানো, অতিথিকে অভ্যর্থনা করা হিন্দুর ধর্ম।”
— “এ কথা শুনলে সম্রাট আলেকজাণ্ডার আনন্দিত হবেন। তাহলে মিত্ররূপে আপনি তাঁকে সাহায্য করবেন?”
...“কি সাহায্য, বলো!”
—“সম্রাট আলেকজাণ্ডার বেরিয়েছেন দিগ্বিজয়ে। সৈন্য আর অর্থ দিয়ে আপনাকে তাঁর বন্ধুত্ব ক্রয় করতে হবে।”
—“সম্রাট আলেকজাণ্ডার আমাদের স্বদেশে এসেছেন দিগ্বিজয়ে। ভারতের বিরুদ্ধে আমার ভারতীয় সৈন্যরা অস্ত্রধারণ করবে, এই কি তাঁর ইচ্ছা?”
—“আজ্ঞে হাঁ মহারাজ! সম্রাটের আর একটি ইচ্ছা এই যে, সুবন্ধু নামে গ্রীকদের এক শত্রু আপনার রাজ্যে আশ্রয় পেয়েছে। তাকে অবিলম্বে বন্দী ক’রে আমার হাতে অর্পণ করতে হবে।”
মহারাজা হস্তী ফিরে সুবন্ধুর দিকে তাকিয়ে বললেন, “যুবক, এই দূতের সঙ্গে তুমি কি গ্রীক-শিবিরে বেড়াতে যেতে চাও?”