পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/২১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বাবার সহিত তাঁহার পূর্ব্বেই পরিচয় ছিল; এবং তাঁহার মারফৎ আমাকেও বলিয়াছিলেন। আপনি জানেন আমি সোজা কথার লোক এবং প্রচার করিয়া বেড়ানোটা অপছন্দ করি, বিশেষতঃ উহা যদি আবার ঘুরাইয়া করা হয়।

 যদি কলেজ তিনটির একত্রীকরণ সম্ভব হয় তাহা হইলে কেহ না কেহ উহার সর্ব্বোচ্চ পদ পাইবেনই। এক্ষেত্রে প্রশ্ন এই যে, এই গুরুত্বপূর্ণ পদটি কাহাকে দেওয়া হইবে? যামিনী কবিরাজ সম্বন্ধে তিনটি কারণে আমার আপত্তি আছে। প্রথমতঃ, আয়ুর্ব্বেদশাস্ত্র সম্বন্ধে তাঁহার জ্ঞান খুব বেশী নয়। এরূপ অগভীর জ্ঞান লইয়া কাহারও পক্ষে প্রাচীন আয়ুর্ব্বেদ-চিকিৎসার পুনরুন্নতি ঘটানো সম্ভব হইতে পারে না। এমন কি আয়ুর্ব্বেদে সত্যই তাঁহার আন্তরিক কোনও বিশ্বাস আছে কিনা সে সম্বন্ধেও আমার সন্দেহ আছে। দ্বিতীয়তঃ, একজন চিকিৎসক হিসাবে তিনি স্পষ্টবাদী নন এবং ইহা হইতেই তাঁহার চরিত্র স্পষ্ট বুঝা যায়। তাঁহার মত একজন প্রধান চিকিৎসককে এখনও যখন পসারের জন্য ভাড়াটিয়া লোকদের উপর অধিকাংশ সময় নির্ভর করিতে হয় তখন তাঁহার উপর আস্থা স্থাপন করা যায় না। চিকিৎসার ব্যাপারে তিনি আয়ুর্ব্বেদ ও এলোপ্যাথির এক “অদ্ভুত সংমিশ্রণ” ঘটাইয়াছেন। তৃতীয়তঃ, তিনি ভণ্ড—যে কৌশল তিনি গ্রহণ করিয়াছেন তাহাতে একেবারে ভণ্ড ছাড়া তাঁহাকে আর কিছু বলা যায় না। তিনি নিজেই একটি চক্রান্তের নায়ক—অষ্টাঙ্গ-আয়ুর্ব্বেদ গোষ্ঠী একটি নূতন কলেজ প্রতিষ্ঠা করিয়া উহার কর্ত্তৃত্ব দখল করিতে চাহিতেছেন। উহার দ্বারা তাঁহাদের তিন প্রকারে লাভ হইতে পারে। (১) তাঁহারা সহজেই একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করিতে পারিবেন, যাহার ব্যয়ভার বেশীর ভাগ কর্পোরেশনকেই বহন করিতে হইবে। (২) তাঁহারা ঐ কলেজটির কর্ত্তৃত্ব দখল করিয়া নিজেদের খ্যাতি ও প্রতিপত্তি বিস্তার করিতে পারিবেন এবং চিকিৎসক হিসাবে তাঁহাদের আয়ও

১৮৮