পাঁচ-সাত-দশজন পুলিশের ভবলীলা শুধু চড় মেরেই সাঙ্গ করে দিতে পারেন! কাকাবাবুর মুখের ভঙ্গীতে সেদিন আমরা খুব হেসেছিলাম, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে অত হাসা ঠিক সঙ্গত হয়নি—আপনি পারলেও বা পারতে পারেন।
ক্তারের মুখের ভাব পরিবর্ত্তিত হইল, কহিলেন, ওটা অতিশয়োক্তি। কিন্তু আমরা কে কে?
অপূর্ব্ব কহিল, আমি এবং তাঁরই দু-চারজন কর্ম্মচারী!
ওঃ—এঁরা! এই বলিয়া তিনি একটা নিশ্বাস ফেলিলেন। অপূর্ব্ব ইহার অর্থ বুঝিল; এবং কিছুক্ষণ অবধি কোন কথা যেন তাহার মুখে আসিল না। সোজা পথটা আজ সোজাই ছিল, কারণ, যে জন্যই হৌক, পথিকের টাকাকড়ি কাড়িয়া লইবার জন্য আজ কেহ তথায় উপস্থিত ছিল না। নির্জ্জন গলিটা নিঃশব্দে পার হইয়া তাহারা বড় রাস্তার কাছাকাছি পৌঁছিলে অপূর্ব্ব সহসা বলিয়া উঠিল, এবার বোধ হয় আমি নির্ভয়ে যেতে পারব। ধন্যবাদ।
প্রত্যুত্তরে ডাক্তার স্বল্পালোকিত সম্মুখের প্রশস্ত রাজপথের বহুদুর পর্য্যন্ত দৃষ্টি প্রসারিত করিয়া ধীরে ধীরে কহিলেন, পারবেন বোধ হয়।
অপূর্ধ্ব নমস্কার করিয়া বিদায় গ্রহণ করিতে গিয়া ভিতরের কৌতূহল কোনমতেই আর সংবরণ করিতে পারিল না, বলিয়া ফেলিল, আচ্ছা, সব্য—
না না, সব্য নয়, সব্য নয়—ডাক্তারবাবু।
অপূর্ব্ব ঈষৎ লজ্জিত হইয়া কহিল, আচ্ছা ডাক্তারবাবু, আমাদের সৌভাগ্য যে পথে কেউ ছিল না, কিন্তু ধরুন তারা দলে বেশি থাকলেও কি সত্য সত্যই কোন ভয় ছিল না?
ডাক্তার কহিলেন, দলে তারা দু-দশজনের বেশি কোন দিনই থাকে না।
অপূর্ব্ব বলিল; দু-দশজন! অর্থাৎ, দু-জন থাকলেও ভয় ছিল না, দশজন থাকলেও না?
ডাক্তার মুচকিয়া হাসিয়া বলিলেন, না।
বড় রাস্তার মোড়ের উপর অপূর্ব্ব জিজ্ঞাসা করিল, আচ্ছা, বাস্তবিকই কি আপনার পিস্তলের লক্ষ্য কিছুতেই ভুল হয় না?
ডাক্তার তেমনি সহাস্যে ঘাড় নাড়িয়া উত্তর দিলেন, না। কিন্তু কেন বলুন ত? আমার সঙ্গে ত পিস্তল নেই।
অপূর্ব্ব বলিল, ওটা না নিয়েই বেরিয়েছিলেন,—আশ্চর্য্য! অন্ধকার গভীর রাত্রি ঝাঁ ঝাঁ করিতেছে, সে জনহীন দীর্ঘ পথের প্রতি চাহিয়া কহিল, পথে না আছে
১০১