পাতা:পথের সন্ধান - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
center
right

 মোগল সাম্রাজ্য যখন ভেঙ্গে পড়লো তখন ইংরেজ সুধু কুঠিওয়ালা হয়ে দেখা দিয়েছে। সম্রাট হয়ে মসনদে বসবার কল্পনা তখনও তার মাথায় গজিয়ে ওঠেনি। প্রবল পরাক্রান্ত জমিদারের তখন বাংলায় অভাব ছিল না। স্বাধীন মানুষের চামড়া যদি তাঁদের গায়ে থাকতো, তা'হলে বাংলার ইতিহাস বদলে যেতে পারতো। দেশকে স্বাধীন করা চুলোয় যাক, তাঁরা পাঁচজনে বুদ্ধি এঁটে দেশটাকে ক্লাইভের হাতে তুলে দিয়ে নিজেরা যে গোলাম সেই গোলামই রয়ে গেলেন। দেশের যারা চাষা- ভূষো তারা কোনোদিনই এ সব ব্যাপারের খোঁজখবর রাখতো না; তখনও রাখলে না। দেশের যাঁরা ব্রাহ্মণ পণ্ডিত তাঁরা ‘তৈলাধার পাত্র’ কি ‘পাত্রাধার তৈল’, এই গভীর প্রশ্নের মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত এ সব ছোটখাট ব্যাপারে মন দেবার সময় পেলেন না। আর যারা তোমার-আমার মত না-জমিদার, না-চাষা, না ব্রাহ্মণপণ্ডিত, তাঁরা মধুর বৈষ্ণব পদাবলী গান করতে করতে মূৰ্চ্ছা যাওয়া অভ্যাস করছিলেন; আর নানা তাল-মান- লয় সহকারে ভগবানকে বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন যে, তিনি মাখনের চেয়েও মোলায়েম, আর মধুর চেয়েও মিষ্টি। কিন্তু পোড়া ভগবান এমনি বেরসিক যে অত আদর অভ্যর্থনা পেয়েও আমাদের বুঝিয়ে দিতে ছাড়লেন না যে তিনি “ভয়ং ভয়ানকানাম্, ভীষণ ভীষণানাম্।”

 দিন কতক না যেতে যেতেই ‘ছিয়াত্তরের মম্বন্তর' আরম্ভ হলো। বাংলার শহর অরণ্য হলো; গ্রামে শেয়াল কুকুর বাস