পাতা:পথের সন্ধান - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পথের সন্ধান

 যে মন সব কাজের গোড়া সেই মনই আমাদের যেন অসাড়, নির্জ্জীব, পঙ্গু হয়ে রয়েছে। বাইরের উত্তেজনার অভাব হলেই আমাদের সব উৎসাহ জুড়িয়ে যায়। পুলিশে যতক্ষণ ধরপাকড় করে, সভাসমিতি ভাঙ্গে, বক্তৃতা বন্ধ করে' দেয়, লাঠি বা গুলি চালায়, ততক্ষণ আমাদের রাজনৈতিক আন্দোলনটা চলে ভাল, কেননা আমাদের দেশের কাজের ধারণা ততটা সৃষ্টিমূলক নয় যতটা প্রতিবাদমূলক। আমাদের মারতে মারতে স্বরাজ পর্য্যন্ত পৌঁছে দেবার ভার আমরা যেন ইংরেজের হাতে তুলে দিয়ে নিশ্চিন্ত হয়েছি। যদি পুলিশের অত্যাচার বন্ধ হয়ে যায় তা'হলে বোধ হয় আমাদের রাজনীতিচর্চ্চার ব্যবসাটাই মারা পড়ে।

 কেন এমন হয়? হয় এইজন্যে যে আমাদের ভিতর অন্তরের স্বাধীনতা এখনও জাগেনি। পরাধীনতার যন্ত্রণা যখন অসহ্য হয়, তখন আমরা খুব খানিকটা চীৎকার করি; আবার পরক্ষণেই সব কথা ভুলে যাই। আর দুর্ব্বলের মত আত্ম-প্রবঞ্চনা করে’ নিজেদের মনকে প্রবোধ দিই যে এই বিশ্মৃতির নামই ক্ষমা, আর এই দুর্ব্বলতার নামই অহিংসা। দেশের আত্মা যদি আমাদের মধ্যে আত্মপ্রকাশ করতো, তা'হলে তাকে বাইরে একটা রূপ দেবার জন্যে আমরা ব্যগ্র হয়ে উঠতাম; কিন্তু সে রূপ আমাদের নিজেদের মনেও এখনও ফোটেনি। আমরা দেশসেবার 'নেতি নেতির দিকটাই দেখেছি, 'ইতি'র দিকটার সন্ধান এখনও পাইনি। স্বাধীন দেশকে কি রূপ দিতে হবে তা আমাদের নেতারা এখনও জানেন না। তাই আমাদের স্বাধীনতার চেষ্টার মধ্যে