পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথে ও পথের প্রান্তে SSS কী। আমাদের প্রতিদিনটা দাগ-ধরা, ছেড়াখোড়া, কাটাকুটিতে ভরা, তার মধ্যে এর সংগতি কোথায় । যারা লোকহিত-ব্রতপরায়ণ সন্ন্যাসী তারা বলে বাস্তব সংসারে দুঃখ দৈন্ত শ্রীহীনতার অন্ত নেই, তার মধ্যে এই বিলাসের অবতারণ। কেন । তারা জানে “দরিদ্রনারায়ণ” তো নাচ শেখেন নি, তিনি নানা দায় নিয়ে কেবলি ছটফট ক’রে বেড়ান, তাতে ছন্দ নেই। এরা এই কথাটা ভুলে যায় যে দরিদ্র শিবের আনন্দ নাচে । প্রতিদিনের দৈন্তটাই যদি একান্ত সত্য হোত তাহলে এই নাচটা আমাদের একেবারেই ভালো লাগত না, এটাকে পাগলামি বলতুম। কিন্তু ছন্দের এই সুসম্পূর্ণ রূপলীলাটি যখন দেখি তখন মন বলতে থাকে এই জিনিসটি অত্যন্ত সত্য —ছিন্ন বিচ্ছিন্ন অপরিচ্ছন্নভাবে চারদিকে যা চোখে পড়তে থাকে তার চেয়ে অনেক গভীরভাবে নিবিড়ভাবে। পদৰ্ণটার উপরেই প্রতিদিনের চলতি হাতের ছাপ পড়ছে, দাগ ধরছে, ধুলো লাগছে, পরিপূর্ণতার চেহারাটা কেবলি অপ্রমাণ হচ্ছে— একেই বলি বাস্তব । কিন্তু পদার আড়ালে আছে সত্য, তার ছন্দ ভাঙে না, সে অস্নান, সে অপরূপ । তাই যদি না হবে তবে গোলাপফুল ফুটে ওঠে কিসের থেকে, কোন গভীরে কোথায় বাজে সেই বাশি যার ধ্বনি শুনে মানুষের কণ্ঠে কণ্ঠে যুগে যুগে গান চলে এসেছে আর মনে হয়েছে মানুষের কলহ কোলাহলের চেয়ে মানুষের এই গানেই চিরস্তনের লীলা । অঙ্গে অঙ্গে যখন নাচ দেখা দিল তখন ঐ ময়লা ছেড়া পদৰ্ণ স্টার এক কোণ উঠে গেল—“দরিদ্র নারায়ণ”কে হঠাৎ দেখা