পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পত্রধারা । واجن থ নয়। তখন মনটা ধড়ফড় করে চেচিয়ে উঠে ব’লে ওঠে—ও নেই ও নেই। দেখতে দেখতে মন পরিষ্কার হয়ে যায়। বাড়ির সামনে কাকর-বিছানো লাল রাস্তায় বেড়াই আর মনের মধ্যে এই ছায়াআলোর দ্বন্দ্ব চলে। বাইরে থেকে যারা দেখে তারা কে জানবে ভিতরে একটা স্বষ্টির প্রক্রিয়া চলছে। এ স্থষ্টির কি আমারই মনের মধ্যে আরম্ভ আমারই মনের মধ্যে অবসান। বিশ্বস্বষ্টির সঙ্গে এর কি কোনো চিরন্তন যোগসূত্র নেই। নিশ্চয়ই আছে। জগৎ জুড়ে অসীম কাল ধরে একটা কী হয়ে উঠছে আমাদের চিত্তের মধ্যে বেদনায় বেদনায় তারি একটা ধাক্কা চলছে। সভ্যতার ইতিহাস ধারায় মানুষ আজ যে অবস্থার মধ্যে এসে উত্তীর্ণ হয়েছে, এই অবস্থাস্থষ্টির প্রক্রিয়ার মধ্যে কত কোটি কোটি নামহীন মানুষের ব্যক্তিগত জীবনের চিরবিস্মৃত চিত্তসংঘাত আছে । স্থষ্টির যা-কিছু রয়ে যাওয়া তা সংখ্যাহীন চলে যাওয়ার প্রতিমুহূতের হাতের গড়া। আজ আমার এই জীবনের মধ্যে স্বষ্টির সেই দূতগুলি, সেই চলে যাওয়ার দল তার কাজ করছে —“আমি” ব’লে পদার্থ টা উপলক্ষ্য মাত্র— বাড়ি তৈরির যে ভারা বাধা হয় আজকের দিনে এর প্রয়োজনীয়তার প্রাধান্ত যতই থাক কালকের দিনে যখন এর । চিহ্নমাত্র থাকবে না তখন কারো গায় একটুও বাজবে না । ইমারত আপন ভারার জন্তে কোথাও শোক করে না । মোদ কথাটা এই-যে, আজ আমার এ আমিটাকে নিয়ে যে-গড়াপেটা চলছে এই লাল কাকর বিছানো রাস্ত।