পাতা:পদাবলী-মাধুর্য্য.djvu/১১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পদাবলী-মাধুর্য্য

কারণ “নিজ করে ধরি দুঁহু কানুক হাত। যতনে ধরিল ধনি আপনার মাখ” প্রভৃতি পদ পড়িতে পড়িতে তিনি আবিষ্ট হইয়া পড়িতেন। কিন্তু স্কুলে ছিলেন শাক্তের অবতার—সাক্ষাৎ মায়ের মূর্ত্তি; আমরা সকলেই তাঁহার প্রহারে জর্জ্জিরিত হইয়াছি।

 কৈশোরান্তে যখন আমার জীবনে নব অনুরাগের ছোঁয়াচ লাগিয়াছিল, তখনও বৈষ্ণব পদ আমি ভোগের রাজ্যের অভিধান দিয়া বুঝি না—ইহা পূর্ণবাবুর কৃপায়।


২৷ “এ কথা কহিবে সই এ কথা কহিবে”

 আমি নিবিষ্ট হইয়া চণ্ডীদাসের পদাবলী পড়িতাম।—বটতলার পদকল্পতরু কিনিয়া লইলাম। ধীরে ধীরে এই গানটিতে আমার মনে একটা নূতন রাজ্যের দরজা খুলিয়া গেল:—

“এ কথা কহিবে সই এ কথা কহিবে,
অবলা এমন তপঃ করিয়াছে কবে?
পুরুষ-পরশমণি নন্দের কুমার,
কি ধন লাগিয়া ধরে চরণে আমার।”

 তিনি স্পর্শ-মণি, যাহা ছুঁইয়া ফেলেন, তাহাই সোণা হইয়া যায়; এমন ধনী তিনি, কুবেরও তাঁহার কাছে ধন প্রার্থনা করেন, সেই কৃষ্ণ কি ধনের প্রত্যাশায় আমার পা ধরিয়া থাকেন, সখীগণ তোমরা বল, আমার মত তপস্যা কে করিয়াছে?—এরূপ অসাধনে সিদ্ধি আমি কি করিয়া লাভ করিলাম!

 সাধকের চক্ষে বিশ্বের সকলই ভাগবত-মূর্ত্তি—তাঁহারই প্রকাশ। স্ত্রী-পুত্র-পরিবার, যাঁহারা নিবিড় স্নেহ দ্বারা আমাকে বাঁধিতেছেন, তাঁহারা ভাগবত শক্তি, তাঁহারা কি নিত্যই চরণ ধরিয়া আমার সেবার