গেল। সহ্য করিবার সীমা আছে—কৃষ্ণের কষ্ট বৃন্দা আর সহিত পারিল না, এবার ভরসা দিয়া তাঁহাকে সঙ্গে লইয়া চলিল।
এই মান-লীলায়, তরল আমোদ-প্রমোদ, হাসি-ঠাট্টা ও বিদ্রুপের মধ্যে সুগভীর সরসী-নীরোদ্ভব প্রেমের ফুল্ল কমল ফুটিয়াছে, মানুষের মনে তিনি যে রস দিয়াছেন, তাহার মধ্যে তিনি আছেন। প্রেম-সরোবরে যে শতদল ফোটে, তাহার শোভার মধ্যে তিনি আছেন, শুক্তির মধ্যে মুক্তা খুঁজিবার জন্য এখানে ডুবারুকে হাতড়াইতে হয় না, পদাবলীর ভাণ্ডারে তাহা আপনিই হাতে আসিয়া পড়িবে।
সখীরা কৃষ্ণ-রাধার লীলায় সর্ব্বদা ইন্ধন জোগাইয়াছে, তাঁহাদের সাহচর্য্য ছাড়া হ্লাদিনী-শক্তির বিকাশ তেমন করিয়া দেখান যাইত না। গোবিন্দ দাস সখীদের কথা বলিয়াছেন-
‘‘প্রেম কারিগর মোরা যত সখীগণ।
নিতি নিতি ভাঙ্গি-গড়ি পীরিতি-রতন।
অন্তরে হাফরে মান অঙ্গারের খনি,
বিরহ-অনলে তাহে ভেজাই আগুনি।
সোণাতে সোহাগা দিয়া সোনাতে ভেজাই,
রসের পাইন দিয়া ভাঙ্গিলে জোড়াই।’’
মান-মিলন
মান ও অভিসারের পর মিলন। শুধু দুঃখের কথা বলিয়া বৈষ্ণব কবিরা কোন কিছু পরিসমাপ্ত করেন না। শুভ-অশুভ দুইই সংসারে আছে, কিন্তু আমাদের বিশ্বাস করিতে হইবে যে, আপাত সমস্ত অশুভের পরিণতি শুভে। শুধু মনে আঘাত দেওয়ার উৎকট আনন্দ