যশোবতী নন্দ, অন্ধ সম বৈধত,
সখাগন, ধেনুগণ, সহসা উঠই না পার।
বেনুরব বিসরণ—বিসরণ নগর বাজার।
কুসুম তেজিয়া অলি, ক্ষিতিতলে লুঠই,
তরুগণ মলিন সমান।
সারী-শুক-পিক, ময়ুরী না নাচত,
কোকিলা না করতহি গান।
বিরহিণী-বিরহ কি কহব মাধব,
দশদিশ বিরহ হতাশ!
শীতল যমুনা জল, অনল সমান ভেল,
কহতহি গোবিন্দ দাস।”
রাধা-কৃষ্ণ লীলার অঙ্কে অঙ্কে চৈতন্য জীবনের ঘটনা। বৈষ্ণবদের কাব্য-কথা বুঝিতে হইলে, চৈতন্যের জীবন-চরিত দিয়া বুঝিতে হইবে—তাহা ছাড়া উপায়ান্তর নাই। কৃষ্ণ-পরিত্যক্ত বৃন্দাবন-চিত্রের সঙ্গে আর একটি চিত্র মিলাইয়া দেখুন—তাহা চৈতন্য-পরিত্যক্ত নবদ্বীপ। চৈতন্য তাঁহার প্রিয় পরিকর জগদানন্দকে পুরী হইতে শচী দেবীকে দেখিতে নদীয়ায় পাঠাইয়াছেন–
‘‘নীলাচল হৈতে, শচীরে দেখিতে,
আইসে জগদানন্দ।
রহি কত দূরে, দেখে নদীয়ারে,
গোকুল পুরের ছান্দ।
লতা-তরু যত, দেখে শত শত,
অকালে খসিছে পাতা।
রবির কিরণ না হয় স্ফূরণ,
মেঘগণ দেখে রাতা।