একবার ভালবাসিয়াছ—সে যেমনই হউক, তাহাকে চিরকাল ভালবাসিতে হইবে। হয়ত সংসারে এ-রকম নিষ্কাম প্রেমে অনেক সময়ে দুঃখ পাইতে হয়, কিন্তু যিনি প্রেমের সাধন-অঙ্গ খোঁজেন, প্রেম তো তাঁহার কাছে তপস্যা। সে তপস্যা ভাঙ্গিলে তাঁহার আর সাধনার পথে যাওয়া চলে না।
‘‘চণ্ডিদাস কহে পীরিতি না কহে কথা
পীরিতি লাগিয়া পরাণ ত্যজিলে পীরিতি মেলয়ে তথা।”’
প্রেম ঘোষণা বা বক্তৃতা নহে। জগতের সমস্ত কষ্ট নীরবে সহ্য করিয়া প্রেমের জন্য যে প্রাণত্যাগ করিতে পারে—সে-ই প্রকৃত প্রেমিক।
‘‘ব্রহ্মাণ্ডব্যাপিয়া আছয়ে যে জন
কেহ না জানয়ে তারে,
প্রেমের আরতি জেনেছে যে জন
সেই সে চিনিতে পারে।’’ (চ)’
চণ্ডীদাসের মতে সুখ-দুঃখ, আশা নিরাশার মধ্য দিয়া যে পার্থিব প্রেমের মর্ম্ম বুঝিয়াছে, সেই মাত্র ভগবৎ প্রেম বুঝিবার অধিকারী—অন্য পথে তাঁহাকে পাওয়া যায় না।
দৈহিক ইন্দ্রিয়ের বিকার যতদিন থাকিবে, ততদিন প্রেমের আস্বাদ দুর্লভ। বহিরিন্দ্রিয়ের তথাকথিত রস শুকাইয়া গেলে, যখন দেহে সুখ-দুঃখ বোধ থাকিবে না, তখন প্রকৃত প্রেমের সন্ধান মিলিবে; তখন নিজের দেহের সুখ-দুঃখ বোধ থাকিবে না;—প্রিয়জনের সুখেই সুখ, তাহার দুঃখেই দুঃখ। কবি অন্যত্র বলিয়াছেন—