পাতা:পদাবলী-মাধুর্য্য.djvu/৩৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পদাবলী-মাধুর্য্য
২৭

করিয়া চণ্ডীদাস বলিতেছেন, রাধিকাকে “কোথা বা কোন্‌ দৈব পাইল?” গায়েন এই গান গাহিবার সময়ে ঊর্দ্ধে অঙ্গুলী নির্দ্দেশ করিয়া আখর দিয়া জিজ্ঞাসা করিয়া থাকে, “সে কোন্‌ দেবতা, রাধিকাকে যিনি এমন করিয়া পাইয়াছেন?” পরবর্ত্তী সময়ে সে দেবতা নদীয়ার সোণার মানুষটিকে এমনই করিয়া পাইয়াছিল, এজন্য তাঁহার জীবন-কথার দ্বারা চণ্ডীদাসের কবিতার টীকা হইয়াছে; নতুবা চণ্ডীদাসের কবিতার এই চিত্র, অন্ধের কাছে মহা-মাণিক্যের ন্যায়, সাধারণ নিকট মাটির ডেলার মত হইয়া পড়িয়া থাকিত।

 চণ্ডীদাসের রাধা ও চৈতন্যের মূর্ত্তি পাশাপাশি রাখিয়া দেখিবেন, একই ছবির দুটি দিক্‌ মাত্র।

 চণ্ডীদাস লিখিয়াছেন:—

“ঘরের বাহিরে দণ্ডে শতবার তিল তিল আসে যায়।
মন উচাটন, নিশ্বাস সঘন, কদম্ব-কাননে চায়॥
রাধার এমন কেন বা হৈল।
সদাই চঞ্চল বসন অঞ্চল,—সংবরণ নাহি করে॥
বসি’ থাকি’ থাকি’, উঠয়ে চমকি’, ভূষণ খসিয়া পড়ে॥”

 রাধামোহন চৈতন্য-সম্বন্ধে লিখিয়াছেন:—

“আজু হাম কি পেখনু নবদ্বীপ-চন্দ।
কর-তলে করই বয়ান অবলম্ব।
পুনঃ পুনঃ গত্যগতি করু ঘর-পন্থ।
ধেনে ধেনে ফুলবনে চলই একান্ত।
ছল-ছল নয়নে কমল সুবিলাস।
নব নব ভাব করত পরকাশ।”

 এক জন “ফুল বনে চলই একান্ত” অপরে কদম্বকাননের দিকে দৃষ্টিপাত করিতেছেন। একজন তিল তিল দণ্ডে দশবার ঘর-বাহির হইতেছেন,