রাধিকা তাঁহার সর্ব্বস্ব কৃষ্ণের পায়ে “কৃষ্ণার নমঃ” বলিয়া ডালি সাজাইয়া দিয়াছেন। বিদ্যাপতির রাধা বলিতেছেন-
‘‘হাতক দরপণ মাথক ফুল,
নয়নক অঞ্জন, মুখক তাম্বুল,
হৃদয়ক মৃগমদ, পীমক হার,
দেহক সরবস্ব, গেহক সার,
পাথীক পাণ, মীনক পানী,
জীবক জীবন হাম তুরা জানি।’’
অর্থাৎ “তুমি আমার সব, পাখীর পাখা না হইলে উড়িবার শক্তি লোপ পায়, সে মাটীতে পড়িয়া মরে, মৎস্যকে জল হইতে ডাঙ্গায় তুলিলে সে কতক্ষণ বাঁচে? তুমিও আমার কাছে সেইরূপ।” চণ্ডীদাসও লিখিয়াছেন,
রাধা নানা উপমায় নিজের প্রেম বুঝাইয়া বলিয়াছেন:—
“জীবক জীবন হাম তুয়া জানি” “তুমি আমার জীবনের জীবন, আমি ইহাই জানি।”
এত কথা বলিবার দরকার কি? দরকার কিছু ছিল, “আমার সম্বন্ধে বুঝাইবার কিছু নাই, তুমি সকলই জান”, তোমা ছাড়া রাধা কায়া-ছাড়া ছায়া—তাহার পৃথক্ অস্তিত্ব নাই। “আমার মনের ভাব পরিষ্কার, কিন্তু তুমি কেমন, তাহা তো এত দিন ধরিয়াও বুঝিতে পারিলাম না। আমি সকল বিসর্জ্জন করিয়াও সোয়াস্তি পাইতেছি না। আমি কাহার হাতে সর্ব্বস্ব দিলাম, কে সে বিরাট্ প্রহেলিকা, তাঁহাকে তো আমি এখনও চিনিতে পারিলাম না।” তাঁহাকে রাধা কত গাল মন্দ দিয়াছেন,