পাতা:পদাবলী-মাধুর্য্য.djvu/৯৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৮৮
পদাবলী-মাধুর্য্য

এই যোজনা তাঁহার প্রিয় শিষ্য জ্ঞানদাস ভাবের সঙ্গতি রাখিয়া করিয়াছেন, এজন্য ইহাতে নিন্দার কিছু নাই।

 আর একটি পদ, যাহা কোন কোন প্রাচীন পুঁথিতে চণ্ডীদাসের কোন কোনটিতে জ্ঞানদাসের ভণিতায় পাওয়া যায়, তৎসম্বন্ধেও আমার কিছু বক্তব্য আছে। সে পদাটি বিখ্যাত—

‘‘সুখের লাগিয়া এঘর করিনু, আগুণে পুড়িয়া গেল,
অমিয়-সাগরে সিনান করিতে সকলই গরল ভেল।
উচল ভাবিয়া অচলে চড়িনু, পড়িনু অগাধ জলে,
লছমী চাহিতে দারিদ্র্য বাড়ল, মাণিক হারালাম হেলে।
সাগর সেচিলাম, নগর বাঁধিলাম, বসতি করিবার আশে।
সাগর শুকাল, নগর ভাঙ্গিল, অভাগীর করম দোষে।’’

 সকলেই অবগত আছেন। জ্ঞানদাস চণ্ডীদাসের অনেক পদই নূতন করিয়া ঢালাই করিয়াছেন। এই গানে চণ্ডীদাসের সুরটী পাওয়া গেলেও ইহার মালিকানা সাব্যস্ত করা সহজ হইবে না। এখনও অনেক তরুণ কবি রবীন্দ্রনাথের ভাবের প্রতিধ্বনি তুলিয়াই ক্ষান্ত হন না, তাঁহার হস্তাক্ষরেরও অবিকল অনুকরণ করিয়া—কোন্‌টি গুরুর পদ, কোন্‌টি শিষ্যের, এই প্রশ্ন সময়ে সময়ে জটিল করিয়া তোলেন। জ্ঞানদাসেরও মৌলিকতা ও কবিত্বশক্তি যথেষ্ট ছিল; সুতরাং তিনি যে উদ্ধৃত পদটির মত একটি সুন্দর পদ নিজেই রচনা করিতে পারিতেন না, তাহা বলা যায় না। তবে প্রাচীনতম পুঁথির পাঠগুলি ও ভণিতাই এক্ষেত্রে প্রামান্য। অপেক্ষাকৃত আধুনিক পুঁথিতে এবং মুদ্রিত পুস্তকগুলিতে দেখা যায়, কোন কোনটিতে পদটী চণ্ডীদাসের এবং কোন কোনটিতে জ্ঞানদাসের ভণিতায় পাওয়া যায়, একথা পূর্ব্বেই বলা হইয়াছে। খুব প্রাচীন পুঁথিতে ইহা চণ্ডীদাসের ভণি-