পাতা:পদ্মাপুরাণ - নারায়ণ দেব.pdf/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VO ( t ) বাঙ্গালা দেশে শৈবধর্শের প্রভাব খুব প্রাচীন বলিয়া মনে হয়। বাঙ্গালীর শক্তিগণের স্ত্রী-দেবতার স্তুতিবাচক গানগুলির মধ্যে যেমন “ মঙ্গলকাব্য,” সেইরূপ শৈবগণের শিবঠাকুরসম্বন্ধে নানা ছড়া ও গানের মধ্যে “শিবায়ন “কাব্য উল্লেখযোগ্য। মঙ্গলকাব্যের কবিগণের ন্যায় শিবায়নের কবিও অনেক ছিলেন। বৈদিক রুদ্র, পৌরাণিক শিব, তন্ত্রের শিব ও বাঙ্গালার প্রাচীন সাহিত্যের কৃষি-দেবতা শিবঠাকুর একই দেবতা অথবা বিভিন্ন দেবতার কালক্ৰমে সমন্বয়ের ফল, তাহা বলা কঠিন। শিবের সহিত মনসাদেবীর বিশেষ সম্বন্ধ দেখিতে পাওয়া DBDDBSS DDBBD DBBiD BDuDuB BB BDBB DDD DDBDBDBD DBDDBB BDB হইয়াছে। এ বিষয়ে মনসামঙ্গলের কবিরা পুরাণের মত মানিয়া চলেন নাই। হিলুদিগের নানা ধৰ্ম্মগ্রন্থে বাণিত শিব দেবতার কথার মধ্যে তন্ত্রোক্ত শিব দেবতা প্ৰথমে পূর্ব-ভারতীয় অবৈদিক কোন জাতির দেবতা ছিলেন। কিনা তাহা কে বলিবে ? তবে এই শিব দেবতাতে মঙ্গোলীয় প্রভাব থাকারও সম্ভাবনা রহিয়াছে। এই সম্বন্ধে জোর করিয়া কিছু বলা চলে না ; তবে শৈব পামিরিয়গণের ধৰ্ম্মাশ্ৰিত মঙ্গোলীয জাতির সহিত মনসা-পূজকগণের উত্তর-পূর্বভারতে এবং বিশেষ করিয়া দক্ষিণ ও পূর্ববঙ্গে যে ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ ছিল তাঁহা অনুমান করা যাইতে পারে। মনসামঙ্গলের প্রমাণানুসারে দক্ষিণ ভারতের প্রাচীন সর্পপূজক দ্রাবিড়দের সহিত বাঙ্গালার মনসা-পূজার সম্বন্ধ অপেক্ষা উত্তর-পূর্বভারতের শৈবধর্মাশ্ৰিত মঙ্গোলীয় ও আট্রিক জাতিদ্বয়ের সহিত ইহার সম্বন্ধ ঘনিষ্ঠতর ছিল বলিয়াই মনে হয়। মনসামঙ্গল সাহিত্যে মনসাদেবীর বাসস্থান জয়ন্তী নগর বলিয়া বাণিত হইয়াছে। হিমালয়ের পদমূলে ও বাঙ্গালার উত্তরে জয়ন্তী নামে পাহাড় এবং আসাম প্রদেশের খাসিয়া-জয়ন্তীয়া নামে পাহাড়ের কথা এই উপলক্ষে বিবেচনা করা যাইতে পারে। এই উভয়স্থানই মঙ্গোলীয় জাতির বাসভূমি। ইহা ছাড়া সৰ্পোের সহিত দক্ষিণ-পূর্ব এসিয়ার অষ্টিকজাতির বিশেষ সম্বন্ধ অনুমান করিবারও প্রচুর কারণ বৰ্ত্তমান রহিয়াছে। শৈবধৰ্ম্ম ও অষ্ট্রিক প্রভাবের ফলে সর্পপূজা দ্রাবিড়দের দেশে বোধ হয় অপেক্ষাকৃত পরবর্তী সময়ে বিশেষ বিস্তৃতিলাভ করিয়াছিল। আর একটি কথা এইস্থানে উল্লেখ করিতেছি। সম্ভবতঃ অনাৰ্য্য কৈবৰ্ত্তাগণ ও চণ্ডালগণ মনসামঙ্গলে এবং কিরাতগণ চণ্ডীমঙ্গলে কিয়ৎ পরিমাণে প্রাধান্য লাভ করিয়াছে । ইহার মনসাদেবীর ও চণ্ডীদেবীর আদিপূজক বলিয়া মনে হয় । মঙ্গলকাব্য ও শিবায়ন-ইহাদের পরস্পরের মধ্যে বিশেষ সম্বন্ধ বৰ্ত্তমান আছে। উভয়ই লৌকিক সাহিত্য। মঙ্গলকাব্যসমূহের প্রথমভাগে শিবায়নের কাহিনী বাণিত হইয়াছে দেখিতে পাওয়া যায়। খুব সম্ভব শিবায়ন প্ৰথমে স্বতন্ত্র কাব্য ছিল না । ইহা নানা শ্রেণীর প্রাচীন বাঙ্গালী কাব্যসমূহের অংশহিসাবে গণ্য হইত। কালক্রমে শিবায়ন স্বতন্ত্রভাবে স্বাচিত হইয়া পৃথক কাব্যরূপে পরিগণিত হইয়া থাকিবে । অবশ্য এই সম্বন্ধে বিরুদ্ধমতও বৰ্ত্তমান রহিয়াছে। শিবায়নে শিবঠাকুর ও তাঁহার পরিবারবর্গের বর্ণনাই কাব্যের বিষয়বস্তু এবং কাব্যবণিত যাবতীয় ঘটনা ঘাঁটিয়াছে কৈলাসে, অর্থাৎ স্বৰ্গলোকে। অপরপক্ষে মঙ্গলকাব্যের ঘটনা ঘাঁটিয়াছে প্ৰধানত: মৰ্ত্ত্যলোকে । বাঙ্গালা দেশে শৈবধৰ্ম্মের প্রসারপ্রতিপত্তি ও প্রাচীনত্ব ইহাকে যে বিশেষত্ব দান করিয়াছে, তাহাতে সাহিত্যক্ষেত্ৰ হইতে