পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/১১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমি বলিলাম, “আমি যে এই দা-কাটা চুরুট খাই, এ আপনি জানলেন কি করে ?” অতুলবাবু বলিলেন, “এই চুরুট কেনা নিয়ে আমাকে একটু বিত্রত হ’তে হয়েছিল। কা’ল বিকালে আমি যখন বাজার করতে যাই, তখন আমার স্ত্রী বলে দিয়েছিলেন যে, আপনি তামাক খান না, আপনার জন্য যেন চুরুট আনা হয়। আমি টালীগঞ্জের বাজার থেকে ভাল চুরুট যা পাওয়া যায়, তাই ছ’টা কিনে এনেছিলুম। আমার স্ত্রী সেই চুরুট দেখে বললেন, এ চুরুট হবে না। আপনি যে চুরুট খান তাই আনতে হবে। আমি ত ভেবে অস্থির। আপনি কি চুরুট খান, তা আমি কি ক’রে বুঝব। তিনি বলেন, বাজারে যত রকম চুরুট পাওয়া যায়, সব একটা একটা ক’রে নিয়ে এস, আমি দেখিয়ে দেব। কি করি মশায়, তখনই আবার বাজারে গেলুম। সব রকম চুরুট একটি একটি ক’রে নিয়ে এলুম। আমার স্ত্রী তার মধ্য থেকে এই রকমের চুরুট দেখিয়ে বল্লেন, আমি দেখেছি, তিনি ঠিক এই রকমের চুরুট খান। তুমি বাজারে গিয়ে আর গুলো ফিরিয়ে দিয়ে এই রকমের চুরুট নিয়ে এস। এই রকমে তিনবার হাঁটাহাটি করে এই চুক্ৰট নিয়ে এসেছি। আপনি কি এই চুরুট খান ?” আমি ইহার উত্তর কি দিব ? এই কথা শুনিয়াই আমি অবাক হইয়া গিয়াছিলাম। এমন আতিথ্য আমি জীবনে কখনও গ্রহণ করি নাই। সেই রাত্ৰিতে বসিয়া আমি কি চুরুট খাইয়াছিলাম, তাহা পৰ্য্যন্তও যিনি দেখিয়া রাখিয়াছেন, তাহাকে কি বলিব, তাহার ভাষা আমি খুজিয়া পাইলাম না। এত আনন্দ বোধ হয় আমি জীবনে কখনও অনুভব করি নাই। আমার ; নয়নদ্বয় অশ্রুভারাক্রান্ত হইল। আমি ঐ সামান্য কয়েকটি চুরুটের মধ্যে রমণী-হৃদয়ের স্নেহ বাৎসল্যভক্তি বিমণ্ডিত দেখিলাম। সত্যসত্যই এ অভিজ্ঞতা আমার পক্ষে eV)