পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নাই। পরাণ যদিও পাঁচশ বৎসর বয়সের যুবক, কিন্তু সে ত স্কুল কলেজে । পড়ে নাই, সভ্যতার আলোকও পায় নাই ; সুতরাং সে পত্নীর জন্য মাতা পিতার অবাধ্য হইতে শিক্ষালাভ করে নাই। চাষার ছেলে, চাষবাস করে, খায় দায়, আমোদ আহলাদ করে, আর এই পচিশ বৎসর বয়সেও বাপের কথার প্রতিবাদ করা দূরে থাকুক, তাহার সম্মুখে কথা বলিতেও সাহস পায় না,-পরাণ সত্যসত্যই গো-বেচারী ভােলমানুষ। পরাণের স্ত্রী নয়ানকে দেখিতে পারিত না। তাহার মনে কেন যে নয়ানের উপর বিতৃষ্ণ জন্মিয়াছিল, তাহার কোন কারণই খুজিয়া পাওয়া যায় না। একে স্ত্রীলোক, তায় সুন্দরী যুবতী ; তাহার মনের ভােব “দেবাঃ ন জানন্তি” আমরা ত ক্ষুদ্র মানুষ ! এতদিন মাথার উপর শ্বশুর শাশুড়ী ছিল,—তাই পরাণের স্ত্রী আত্মপ্ৰকাশ করিতে পারে নাই। সে হয় তা প্রতিদিন আল্লার কাছে শ্বশুর শাশুড়ীর মৃত্যুকামনা করিত; কিন্তু আল্লা, পীর বা প্যায়গম্বর কেহই তাহার এ আবেদন বা অবদারে কর্ণপাত করেন নাই। অবশেষে কি কারণে জানি না, ওলাদেবী তাহার আরজ মঞ্জুর করিলেন। পরাণের বাপ মা সংসারের কর্তৃত্বভার তাহাদের পুত্রবধুর উপর সমর্পণ করিয়া ওলাদেবীর অনুসরণ করিল। পরাণের স্ত্রী হঁাপ ছাড়িয়া বঁচিল । ংসারের কর্তৃত্বভার হাতে পাইয়াই পরাণ-পত্নী নয়নের উপর তাহার ক্ষমতা জাহির করিতে লাগিল। বীে যখন অকারণ তাহার উপর বাক্যবাণ বর্ষণ করিত, তখন সে ছেলেমানুষ ছলছলনয়নে তাহার দিকে চাহিয়া থাকিত - একটী কথাও তাহার মুখ দিয়া বাহির হইত না। বাপমায়ের মৃত্যুর পর প্রথম প্ৰথম দুই চারি দিন সে বৌয়ের নিকট এটা ওটা চাহিত, ক্ষুধাবােধ হইলে খাইতে চাহিত; কিন্তু সে যখন দেখিল যে বীে মুখানাড়া না দিয়া কথা বলে না, তখন সে ক্ষুধার কাতর হইলেও মুখ ফুটিয়া ভাত