পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অতুলবাবু হাসিয়া বলিলেন, “আমি দোকানদার মানুষ-বিশেষ একলা মানুষ-আমাকে সব কাজই তাড়াতাড়ি করতে হয়। আমার কোন দিনই পাঁচ মিনিটের অধিক সময় খেতে লাগে না । আজ খেতে বসে, আপনার কথা হতে হতেই দেৱী হ’য়ে গেল।” আমি হাসিয়া বলিলাম, “দোকানদার মানুষেরা ত দুপুর বেলা একটু ঘুমায়। আপনি এই বিছানায় একটু গড়াগড়ি দিয়ে নিন।” আবার ভুল করিলাম। আমার কথা শুনিয়া অতুলবাবুৰ মলিনমুখে বলিলেন, “স্কুল ছেড়েই বছর তিনেক পণ্ডিতী চাকরী করেছি, দিবানিদ্রার অবকাশ পাই নাই! অদৃষ্ট বিপৰ্য্যয়ে মুদীখানার দোকান ক’রেও পূর্বের অভ্যাস এখনও ভুলতে পারছিনে। আমার জীবনের গত ২৪ বৎসর যদি একেবারে মুছে ফেলবার মত কোন ঔষধ পেতাম, তাহলে--” আমি তঁহাকে বাধা দিয়া বলিলাম, “গত চব্বিশ বৎসরের সঙ্গে আমি কোন সম্বন্ধই রাখতে চাইনে। গত শনিবার থেকে পরিচয় আরম্ভ হওয়াতেই আমি পরিতৃপ্ত ও কৃতার্থ।” অতুলবাবু অতি ধীরভাবে বলিলেন, “প্ৰতিজ্ঞা করেছিলাম যে, আমার জীবনের কষ্টযন্ত্রণার কথা পৃথিবীতে আর কা’রও কাছে প্ৰকাশ করব না ; কিন্তু আজ আমার সে প্ৰতিজ্ঞা ভঙ্গ করব। আপনাকে সব কথা না বলে আমি পারছি না । আপনি আমাদের যে স্নেহের চক্ষে দেখতে আরম্ভ করেছেন দুইদিনের সামান্য পরিচয়ে আমাদের প্রতি যে অনুগ্রহ প্ৰকাশ করছেন, আমরা যে তার মোটেই উপযুক্ত নই, আমরা যে সমাজের কারও একটু মাত্ৰও কৃপালাভের অধিকারী নই, এ কথা আপনাকে না বলে থাকতে পারছি না। আপনাকে সকল কথা বলবার জন্য আমার স্ত্রী আমাকে ব’লে দিয়েছেন। যা বলব, তা আমার অকিঞ্চিৎকর জীবনের কাহিনী নয়—আমার স্ত্রীরই জীবনকথা O