পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রামেই ভিন্ন দলের এক গৃহস্থের বাড়ীর একটি বিধবার সম্বন্ধে নানা কুৎসা শুনিতে পাওয়া যাইত। আমার দাদার নামও সেই কুৎসায় সংশ্লিষ্ট ছিল। এই কথা যখন আমার কর্ণগোচর হয়, তখন আমি বৌদিদিকে এ কথা বলি। তিনি বলেন “কথাটা আমিও শুনিয়াছি। অনেকে অনেক কথা বলে ; তার মধ্যে সত্য মিথ্যা আছে। আমি খোজ নিচ্ছি, তারপর যা হয় করা যাবে।” এই প্রৌঢ় বয়সে দাদার চরিত্রদোষ ঘটিলে যে বিষয় রক্ষা পাইবে না, এমন কি তার প্রাণও যাইতে পারে, এই ভয়ই আমার প্রবল হইয়াছিল। কিন্তু দাদার এই পাপের গুরুতর দণ্ড যে আমাকে ভোগ করিতে হইবে, এ কথা আমি স্বপ্নেও ভাবি নাই । “এক বুধবার প্রাতঃকালে আমি স্কুলঘরে বসিয়া একটি প্ৰাইভেট ছাত্রকে পড়াইতেছি, এমন সময়ে আমাদের চাকর হরিদাস হাঁপাইতে হাঁপাইতে আসিয়া উপস্থিত হইল এবং আমাকে বলিল “ছোটবাবু, মেজবাবু আপনাকে এখনই বাড়ী যেতে বলেছেন।” আমার দাদাকে সকলেই মেজবাবু বলিয়া ডাকিত। আমি উৎকষ্ঠিত চিত্তে বলিলাম “কোন রে হরে ? বাড়ীর সব ভাল ত ?” হরিদাস ঢোক গিলিয়া বলিল, “এঞ্জে বাড়ীর সকলের অসুখ বিমুখ হয় নাই।” আমি বলিলাম, “তবে এত তাড়াতাড়ি যেতে বলেছেন কেন ? তুই যা, দাদাকে বলিস। আমি স্কুলের ছুটীর পর যাব এখন।” . হরিদাস বলিল, “এজ্ঞে, মেজবাবু বলেছেন- আপনাকে এখনই সঙ্গে করে নিয়ে যেতো।” আমি বলিলাম “কোন দাঙ্গা হাঙ্গামা হয় নি। ত ?” হরিদাস বলিল, “এজ্ঞে না। আপনি শিগগির চলুন।” আমি বলিলাম “তুই তা’হলে কিছুই জানিস নে!”। হরিদাস সে কথার কোন উত্তর না দিয়া বলিল, “এজ্ঞে, আপনি চলুন, আর দেরী কৰ্ব্বেন না!” 8