পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বীপান্তরবাসের আদেশ হইল। আমি এবং আর সকলে আদালত-গৃহের এক পার্থে দাড়াইয়া এই দণ্ডাজ্ঞা শুনিলাম। বেলা তখন প্ৰায় চারিটা। এই মোকৰ্দমার রায়ের পরই জজ সাহেব উঠিয়া গেলেন-আদালতের কাৰ্য্য শেষ হইল। আমরা সকলে বাহিরে আসিলাম। আমার স্ত্রাকেও ৷ সে দিন আদালতে উপস্থিত করা হইয়াছিল। সেও বাহিরে আসিল । তাহার পর কি হইল, সে কথা আপনাকে কি করিয়া বলিব! সে দৃশ্যের বর্ণনা কেমন করিয়া দিব। দাদা, আমি, আমার খুড়শ্বশুর, আমার দুই শুষ্ঠালক এবং তিন চারিজন প্ৰতিবেশী সকলে আদালতের বাহিরে আসিয়া দাড়াইলাম। তখন দাদা বলিলেন, “চল, কালীঘাটে মাকে দর্শন করিয়া दाऊँी श्रांछे।” আমার স্ত্রী একটু দূরে দাড়াইয়া ছিল! অভাগী হয় তা জানিত না। এই জনসমুদ্রে তাহাকে একাকিনী ফেলিয়া, চিরনিৰ্বাসিত করিয়া আমরা ঘরে ফিরিয়া যাইতেছি। সে হয়ত মনে করিয়াছিল কেহ না কেহ এখনই তাহাকে ডাকিয়া লইবে । তাহার স্বামী, তাহার খুড়া, তাহার দাদা সকলেই উপস্থিত-এখনই তাহদের মধ্যে কেহ তাহার পার্থে যাইয়া দাড়াইবে । কিন্তু কৈ, কেহই ত তাহার দিকে ফিরিয়া চাহিল না, সকলেই চলিয়া যাইবার উদ্যোগ করিল। আমি তখন আর স্থির থাকিতে পারিলাম না! এত দিন কতৃ কথা শুনিয়াছি-কত হৃদয়বিদারক ব্যবস্থার কথা শুনিয়াছি, কিন্তু এক দিনও একটী কথার উত্তর করিবার শক্তি-সমর্থ্য আমার হয় নাই। সে দিন সেই ভীষণ মুহূৰ্ত্তে আমি সেই অভাগীর দিকে চাহিলাম-দেখিলাম সেও কাতরনয়নে আমার দিকে চাহিয়া আছে। অবগুণ্ঠন সত্ত্বেও আমি সবই দেখিতে পাইলাম । আমি তখন উচ্চৈঃস্বরে বলিলাম, “দাদা, এখন ওর কি হবে ?”

  • ଳ ତଳ