পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

না-তিনিও আমার সঙ্গে সঙ্গে নামিয়া পড়িলেন। গিরিশবাবু তখন জাগিয়া ছিলেন । তিনি গাড়ী থামিবার শব্দ পাইয়াই বাহিরের দিকে চলিয়া আসিতেছিলেন। দ্বারের নিকট আমাকে দেখিয়াই চীৎকাৰ করিয়া কঁাদিয়া বলিলেন, “বেয়াই, আমার সুধা আর নাই ।”-এই বলিয়া তিনি আমাকে জড়াইয়া ধরিয়া কঁাদিতে লাগিলেন। এই কথা শুনিবা মাত্র দিদি “বাবা গো” বলিয়া দ্বারের সম্মুখে পড়িয়া গেলেন। আমি ও গিরিশবাবু তাড়াতাড়ি তাহাকে তুলিতে গেলাম-দেখিলাম তিনি মূচ্ছিতা হইয়াছেন। তখন তঁহাকে ধরাধরি করিয়া বাড়াব মধ্যে লইয়া যাওয়া হইল। সুরমা কঁাদিতে কঁাদিতে আসিয়া তাহার বুকের উপর আছড়াইয়া পড়িল-বাড়ীময় কান্নার রোল পড়িল । বাড়ীর স্ত্রীলোকেরা আসিয়া ভঁাহাদিগকে উপরে লইয়া গেলেন। তাতার পর গিরিশবাবুর নিকট শুনিলাম সেই দিন প্ৰাতঃকালে সুধাংশুর কলেৰা হয়। সহরে যত বড় বড় চিকিৎসক আছে—সকলকেই দেখান হয়, কিন্থ: কিছুতেই কিছু হইল না-সন্ধ্যার সময় সকলকে ফাঁকি দিয়া সুধাংশু কোথায় চলিয়া গেল। হায় কলেরা, তুমি কি আমার যথাসৰ্বস্ব লইবােব জন্যই প্ৰতিজ্ঞা করিয়াছ। ঐ রোগে বাবা গেলেন, ঐ রোগে মা গেলেন, ঐ রোগে সুধা গেল ; এখন আমাকে আর দিদিকে, লাইলেই তর্কালঙ্কারের বংশ লোপ হয় ; আমরাও বাচি । দুই দিন সেখানে থাকিয়া তৃতীয় দিনে দ্বাদশবর্ষীয়া বালিকা সুরমাকে সঙ্গে লইয়া বাড়ী ফিরিলাম। গিরিশবাবু শ্ৰাদ্ধের দিন পৰ্য্যন্ত সুরমাকে রাখিতে চাহিয়াছিলেন-আমি বলিলাম, “সে যা হয়, আমি ওখানেই করিব।”-গিরিশ বাবু আর আপত্তি করিলেন না । মনে করিয়াছিলাম ভাগিনেয়ীটীর বিবাহ দিলাম, এখন দিদিকে কাশী পাঠাইতে পারিলেই কিছুদিন হাত পা ছড়াইয়া বিশ্রাম করিব । {ঝ} e RR ,