পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হইবে। কিন্তু পরীক্ষণেই তাহার মনে হইল যে, পলায়ন করিয়া ত সে শাস্তির হাত এড়াইতে পরিবে না ; পলায়ন করিলে হয় তা শান্তি আরও গুরুতর হইবে। বালক কি করিবে, স্থির করিতে না পারিয়া ঘাটের ধারে দাড়াইয়া কঁাদিতে লাগিল । এদিকে তাহার ফিরিয়া আসিতে বিলম্ব দেখিয়া তাহার ভ্রাতৃবধু চীৎকার করিয়া ডাকিল। “ওরে, হাড়হাবাতে, পুকুর ঘাট কি যমের বাড়ী ? এমন বজাত, কুড়ে ছেলেও দেখি নি!” নয়ান তখন কি করে! যাহা অদৃষ্ট থাকে তাহাই হইবে, ভাবিয়া সে কঁাদিতে কঁাদিতে বাড়ীর দিকে আসিতে লাগিল। তাহার পা দুখানি আর চলে না। যখন সে বাড়ীর মধ্যে প্ৰবেশ করিল, তখন তাহার ভ্রাতৃবধু গৰ্দভনিন্দী স্বরে বলিল “লবাবজাদার আর ঠ্যাং চলে না, পুকুর কি সাতকোশ রে কুড়ে । দে পাথর বাটী!” নয়ান মৃদুস্বরে বলিল “পাথর বাটীটা ভেঙ্গে গেছে, আমি পা পিছলৈ প’ড়ে গিয়েছিলাম।” আর যাবে কোথায় ! রাক্ষসী বৌটা একেবারে বাঘিনীর মত শর্জন করিয়া উঠিল, “ভেঙ্গে গেছে ! ওরে সয়তান, হারামখোর, বেইমান, কেমন ভেঙ্গে গেছে, দেখাচ্ছি।” এই বলিয়া পরাণের স্ত্রী নয়নের দিকে ধাবিত হইল। নয়ান যদি তখন পলায়ন করে, তবে আর তাহাকে প্রহার খাইতে হয় না; কিন্তু ছেলেটা এতই শান্ত, এতই ভালমানুষ, এতই ভাত যে, বৌয়ের রণচণ্ডী মূৰ্ত্তি দেখিয়া তাহার বুদ্ধিসুদ্ধি লোপ পাইয়া গেল। সে কাঠের পুতুলের মত সেইখানে দাড়াইয়া রহিল। ১ পরাণের স্ত্রী ছুটয়া আসিয়া “তবে রে হারামের পুত” বলিয়া সেই বালকের গালে ঠাস করিয়া চড় লাগাইল। নয়ান “ও আল্লা, জান গ্যাল” বলিয়া পড়িয়া গেল। রাক্ষসীর তখনও রাগ থামে নাই। সে ঐ মূচ্ছিত