পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/১৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লম্বা তেমনি চওড়া। ছমির যখন কোন যুদ্ধযাত্ৰা করিবার সময় তাহার সেই পাকা বঁাশের লাঠি হাতে করিয়া জমীদার বাড়ীর প্রাঙ্গণে দাড়াইয়া ভীষণ স্বরে ‘রে রে রে রে দীন” বলিয়া চীৎকার করিয়া উঠিত, তখন নিকটের পাঁচসাত খানি গ্রামের লোকের ভয়ে হৃদূকম্প হইত। কিন্তু যখন দাঙ্গা হাঙ্গামা, গোলমাল কিছুই থাকিত না, তখন ছমির সর্দার আর এক মানুষ হইয়া যাইত ; তখন তাহার হাস্য কৌতুকে, বালকের ন্যায় কোমল ব্যবহারে সকলেই মুগ্ধ হইয়া যাইত। ছমির ভবিষ্যৎচিন্তা করিত না । কাল কি খাইবে ভাবিয়া একটি পয়সাও সঞ্চয় করিত না। লুট তরাজ করিয়া যেখানে যাহা পাইত, জমীদার বাড়ীতে নানা উপলক্ষে যাহা কিছু পুরস্কার পাইত, সমস্তই সে গ্রামের গরীব দুঃখীকে বিলাইয়া দিত ; চিড়ে মুড়কী বাতাসা কিনিয়া গায়ের ছেলেদেরু খাওয়াইয়া দিত। তখন কেহই মনেও করিতে পারিত না, এই ছমির সর্দার দাঙ্গা হাঙ্গামার নামে নাচিয়া উঠিতে পারে, দশ বিশটা কঁচা মাথা উড়াইয়া দিতে অনুমাত্রও দ্বিধা বোধ করে নাম লোকের ঘরে আগুন দিয়া রোশনি দেখিয়া প্ৰফুল্ল হয় । ছমির সর্দার বলিত “লাঠিখান হাতে করলি আমার গর্দানে ভূত চাপে ; তখন আর আমি ছমির থাকিনে, তখন আমারে সয়তানে ধাওয়া করে, তা ন’লি কি যার তার মাথায় বাড়ি দিতি পারি।” এই ভাবে কিছুদিন চলিয়া গেল। ছমিরের বয়স যখন চল্লিশ বৎসর, জমীদার গজেন্দ্রনারায়ণ রায়ের যখন অতুল প্ৰতাপ, সেই সময়ে একদিন জমীদার বাবু ছমির সুর্দারকে ডাকিয়া বলিলেন “ছমির ভাই, এই অমাবস্যার দিন শানগরের হাট লুঠ করতে হবে। হাটের দখল নিয়ে মামলা মোকৰ্দমা আমি করব না । ও হাটের মালিক আমরাই ত ছিলাম, এখনই না হয় খায়েদের হাতে গিয়েছে। SN9