পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/১৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছমির সর্দার এতক্ষণ পরে পশ্চাতে ফিরিয়া দেখে গজেন্দ্রবাবু বর্শাবিদ্ধ হইয়া দ্বারের পার্শ্বে পড়িয়া আছেন, ক্ষতস্থান দিয়া অল্প অল্প রক্ত বাহির হইতেছে,-আর তঁহার মন্তকের নিকট র্তাহার মুখের দিকে দৃষ্টি সম্বদ্ধ করিয়া খুকীকে কোলে লইয়া নীরব নিম্পন্দ ভাবে সুরবালা দাড়াইয়া আছেন । ছমির সর্দার চীৎকার করিতে করিতে সামলাইয়া গেল। ক্ষতস্থানের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করিয়া সে সুরবালাকে বলিল, “বোঁ মা, এই জায়গাড়া চাপে ধরে রাখ-আমি এখনই অষুদ নিয়ে আসাতিছি।”-এই বলিয়া ছমিৱ উৰ্দ্ধশ্বাসে বাহিরের দিকে দৌড়াইল এবং দেখিতে দেখিতে কতকগুলি গাছের পাতা লইয়া ফিরিয়া আসিল । ছমির অচেতন্যপ্ৰায় গজেন্দ্ৰবাবুর পার্শ্বে বসিয়া বাম হস্তে ক্ষতস্থান চাপিয়া ধরিল এবং দক্ষিণ হস্তে অতি সুকৌশলে বর্শাটি টানিয়া বাহির করিল। বর্শ হৃৎপিণ্ড বিদ্ধ করিতে পারে নাই। তখন কয়েকটা পাতা চিবাইয়া তাহার রস সে ক্ষতস্থলে প্ৰবিষ্ট করাইয়া দিল, অপর তিন চারিটি পাতা দ্বারা ক্ষতের উপরিভাগ আবরণ করিয়া বলিল, “শীগগির, একখান কাপড় আন।” একজন তখনই কাপড় দিল । ছমির সুদক্ষ চিকিৎসকের ন্যায় সমস্ত বক্ষস্থল বেষ্টন করিয়া ব্যাণ্ডেজ বাধিয়া দিল। তাহার পর পার্শ্ববৰ্ত্তী একজনকে বলিল “এখন শিগগির একজন ডাক্তার ডাকৃতি যাও।” খুকী এতক্ষণ ভয়ে মায়ের কোলের মধ্যে মুখ লুকাইয়া ছিল। এখন ধীরে ধীরে মুখ তুলিয়া চাহিয়া দেখে, তাহার পিতার পার্শ্বে ছমির বসিয়া আছে। সে তখন বলিল, “জ্যা, কাম করবি নে ?” ছমির হা হা করিয়া কঁাদিয়া ফেলিল। মায়ের কোল হইতে খুকীকে লইয়া তাহার সেই বিশাল ধক্ষের মধ্যে চাপিয়া ধরিয়া রুদ্ধকণ্ঠে বলিল, “ম আমার, আর একটু হবিই ত কাম শেষ হচ্চিল। আরেশালার রােগ!--” 8 9