পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰায় ভূপতিত বালককে একটী পদাঘাত করিয়া বলিল “ন্যাকামী দেখা ! ওঠ বলছি, নইলে তোর গোস্ত টুকরো টুকরো করব।” নয়ান মূচ্ছিত হয় নাই, কিন্তু সেই দৃঢ়হস্তের চড় তাহার বড় লাগিয়াছিল, এবং চড়ের বেগ সামলাইতে না পারিয়া সে পড়িয়া গিয়াছিল। পাছে আরও প্ৰহার খাইতে হয়, এই ভয়ে সে উঠিয়া বসিল। পরাণের স্ত্রী তখন আজ্ঞা প্রচার করিল, “বোরো আমার বাড়ী থেকে । আর যদি এ বাড়ীতে ঢুকবি তাহ’লে তোরে খুনই করে ফ্যালব৷” বালক নড়িল না। রাক্ষসী আবার গৰ্জিয়া উঠিল “শিগগির বেরো, নইলে তোর ভাল হবে না ।” বেলা তখন দ্বিপ্রহরী। চৈত্র মাসের রৌদ্র পৃথিবীময় আগুন ছড়াইয়া দিতেছিল। সেই সময়ে পিতৃমাতৃহীন সাতবৎসরের বালক নয়ান কঁাদিতে কাদিতে একবার বৌয়ের মুখের দিকে চাহিল। সেখানে দয়া বা করুণার লেশ মাত্ৰ দেখিতে পাইল না। সে তখন ধীরে ধীরে উঠিয়া বাড়ীর বাহির হইয়া গেল। তখনও তাহার মুখে জলবিন্দু পড়ে নাই । মা বাচিয়া থাকিলে এতক্ষণ তাহার তিনবার আহার হইয়া যাইত । এখন আর তাহার সে দিন নাই! এখন যে তাহার মুখের দিকে চাহিবার লোক নাই! এক বড় ভাই, সে সকল সময় বাড়ী থাকে না ; নয়ানের উপর যে অত্যাচার হয়, তাহাও সে জানে না। নয়ানও কোন দিন কোন কথা বৌয়ের ভয়ে দাদাকে বলে নাই । নয়ান বাড়ীর বাহির হইয়া ভাবিতে লাগিল, কোথায় যাইবে। একবার ভাবিল পাশের কোন বাড়ীতে গেলে হয়,-পরীক্ষণেই তাহার মনে হইল কাহারও বাড়ীতে গেলেই সে সময় সকল কথা বলিতে হইবে ; আর সে কথা বৌয়ের কানে পৌছিলে তাহার আর রক্ষা থাকিবে না। বয়স সাত বৎসর হইলে কি হয়, এই অল্প কয়েক দিনের দুঃখ ও নিৰ্য্যাতন, তাহার \სტ