পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বয়সকে দ্বিগুণ করিয়া দিয়াছিল। সে তখন স্থির করিল, সে কোথাও যাইবে না। বাড়ীর বাহিরে রাস্তার ধারে গাছের ছায়ায় সে বসিয়া । থাকিবে । রাগ পড়িয়া গেলে বীে তাহাকে ডাকিয়া ভাত দিবেই। আর সে যদি নাই ডাকে, তাহার দাদা ত সন্ধ্যার পূৰ্ব্বে বাড়ী আসিবে ; তখন সে দুইটা খাইতে পাইবেই। একবেলা না খাইলে ত মানুষ আর মরে না | নয়ান রাস্তার পাশ্বে বটগাছের শীতল ছায়ায় ঘাসের উপর শুইয়া রহিল। প্রথম কিছুক্ষণ তাহার বড় ক্ষুধাবোধ হইতে লাগিল ; তাহার পর সর্বসন্তাপনাশিনী নিদ্ৰা আসিয়া এই অনাথ শিশুকে কোলে লইয়া বসিলেন। বালক কিছুক্ষণের জন্য মায়ের কোলে স্থান প্ৰাপ্ত হইল। সন্ধ্যার পূর্বে পরাণ দাখানি হাতে করিয়া শ্রান্তদেহে, ধীর পদবিক্ষেপে যখন বাড়ীর সম্মুখের সেই গাছের নিকট উপস্থিত হইল, তখন সে দেখিল নয়ান শুল্কমুখে মলিনভাবে সেই বৃক্ষতলে বসিয়া আছে। “ওখানে আমন ক’রে বসে আছিস যে নয়নে ৷” বলিয়া পরাণ সেই স্থানে দাড়াইল । তাহার দাদার-আপন মায়ের পেটের ভাইয়ের মুখের দিকে চাহিয়া নয়ানের শোকের সাগর উথলিয়া উঠিল “ সে কঁাদিয়া ফেলিল-তাহার মুখ দিয়া একটি কথাও বাহির হইল না। পরাণ তখন নয়ানের নিকট সরিয়া আসিল, তাহার হাত ধরিয়া তুলিল,” মেহের স্বরে জিজ্ঞাসা করিল “নয়ান, কি হয়েছে ভাই ! তুই কঁদেছিল। কেন ? তোর মুখ শুকিয়ে গেছে কেন ? তুই কি কিছু খাস নি ?” এমন মেহের স্বর যে নয়ান অনেক দিন শোনে নাই। পৃথিবীতে এমন কথা বলিবার যে তাহার কেহ আছে, তাহা ত সে জানিত না । নয়ান কঁাদিতে লাগিল । পরাণ তখন তাহাকে নিজের কোলের মধ্যে টানিয়া লইল, তাহার স্কন্ধের কালো গামছাখানি দিয়া নয়ানের মুখ মুছইয়া ጓ