পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরাণ সেই প্ৰথম কথা বলিল ; সে বলিল “বাবুজি, আমার কথা আমিই বলব, সেলাম!” উকিল বাবু বিমুখ হইয়া চলিয়া গেলেন। মোকদ্দমার ডাক পড়িল। হাতকড়িবদ্ধ পরাণকে কাঠগড়ায় দাড় করান হইল। সরকারী উকিল মাথার শামলাটা ভাল করিয়া নাড়িয়া চাড়িয়া বসাইয়া একবার গলা ঝাড়িয়া যখন মোকদ্দমার অবস্থা বলিবার জন্য প্ৰস্তুত হইলেন, তখন পরাণ বলিয়া উঠিল, “ধৰ্ম্মাবতার, সায়েব, আর কাউকে কিছু বলতে হবে না। যা যা বলতে হবে। আমিই হুজুরের কাছে ব’লে যাচ্ছি।” এই বলিয়া সে তাহার অবস্থার কথা, তাহার পিতামাতার মৃত্যুর কথা, তাহার স্ত্রীর বদমেজাজের কথা বলিতে লাগিল। তাহার পর স্বর আরও একটু উচু করিয়া সে বলিল “হুজুর, ধৰ্ম্মাবতার, সায়েব, কোম্পানী বাহাদুর, আমার পরিবার আমার ঐ ছোট ভাইকে ভাত দিত না, যখন তখন তারে ধ’রে মারত। আমি জন খাটি, তামাম দিন পয়সার ধান্দায় ঘুরি ; ঘরে কি হয় না হয়, তার কি খবর আমি রাখতি পারি? যে দিন খুন হয়, সেদিন ধৰ্ম্মাবতার, আমি মজুরী করে সারাদিনে সাতটা পয়সা কামাই করে ঘরে যাতিছিলাম ; মেজাজটা বড়ই খারাপ ছিল। বাড়ীর সুমুকে গাছতলায় দেখি “নয়ান ব’সে আছে। তার মুখ শুকিয়ে গেছে—আমারে না দেখে সে হাউ হাউ ক’রে । কঁাদতি লাগল। হুজুর, আমাদের বাপ মা নেই, আমার ঐ একটা ভাই। তার কান্না দেখে আমার পরাণের মদি কেমন করে উঠল। আমি গামছা দিয়ে তার মুখ মোছায়ে দেলাম; তারে দুইটা মিষ্টি কথা বললাম। সে তখন বলল কি, যে একটা পাথরের খোরা নিয়ে সে ঘাটে গিছিল; ঘাট পিছল ছিল। নয়নে সেই ঘাটলায় পা পিছলে পড়ে গিছলো ; হাতের খোরাটা প’ড়ে একবারে চৌচির হয়ে গেল। তাই না শুনে, আমার পরিবার নিয়ানকে ঠাস করে একটা চড় দিল। ভাই আমার সেই চড় Ο Ο