পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰাণকে আকুল করিয়া তুলিত! আমি বৃদ্ধ শান্তিদাদার বুকে মুখ লুকাইয়া সতীশোকে পাগুল বিশ্বেশ্বরের জন্য অশ্রুবিসর্জন করিতাম। আমার এক এক সময়ে মনে হইত, শান্তিদাদার কাছে যে শিক্ষালাভ করিয়াছিলাম, তাহাই আমার জীবনপথের আপার্থিব পাথেয়। আর তাহার পর-ওগো, সেই কথা বর্কিবার জন্যই ত,-সেই মৰ্ম্মভেদী কাহিনী বলিবার জন্যই ত—আমার ছাত্রজীবনের দুই একটা কথা বলিলাম। কলিকাতায় আসিয়া বাগবাজারে গঙ্গাতীরে আমরা একটা ছোট বাড়ী ভাড়া করিলাম। এ স্থান হইতে প্রেসিডেন্সি কলেজ অনেক দূর বলিয়া বাবা প্ৰথমে আপত্তি করিয়াছিলেন ; কিন্তু শান্তিদাদা যখন বলিলেন, “এই স্থানই ভাল ; বুড়ো মানুষ, রোজ গঙ্গাস্নান ক’রে কৃতাৰ্থ হব।” তখন বাবা আর আপত্তি করিলেন না। তিনি একটি রাঁধুনী বামুন ও একটি চাকর নিযুক্ত করিয়া দিয়া এবং আমাকে প্রেসিডেন্সি কলেজে প্রবিষ্ট করাইয়া দেশে চলিয়া গেলেন। আমি আমার ছাত্রজীবনের দীর্ঘ পাঁচ বৎসর এই বাড়ীতেই কাটাইয়াছিলাম। বুড়া শান্তিদাদা আমার অভিভাবকরূপে বাস করিত। শান্তিদাদা এই বুড়া বয়সে কলিকাতায় আসিয়া লেখাপড়া শিখি • বার জন্য আগ্ৰহ প্ৰকাশ করিয়াছিল। আমার বামুন ঠাকুর কিঞ্চিৎ লেখাপড়া জানিত ; শান্তিদাদা অতি অল্প সময়ের মধ্যেই তাহার নিকট হইতে বাঙ্গাল শিখিয়া ফেলিয়াছিল এবং সে রামায়ণ মহাভারত অনর্গল পড়িয়া যাইতে পারিত। অবসর সময় কাটাইবার এই উপায় পাইয়া বুড় বড়ই শান্তিলাভ করিয়াছিল। কিছুদিন পরে তাহার দুই একখানি শাস্ত্রগ্রন্থ পড়িবার ইচ্ছা হইয়াছিল; কিন্তু আমারু এত অধিক সময় ছিল না যে, তাহাকে সংস্কৃত শিখাই। তবে তাহার পাঠের জন্য আমি শ্ৰীমদ্ভাগবত, গীতা, চণ্ডী প্রভৃতি আনিয়া দিয়াছিলাম। সে তাহার NA