পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঝড়ের বেগও কমিয়া আসিয়াছে। আমরা মনে করিলাম আর জল ঝড় হইবে না । আমাদের ষ্টীমার প্রায় বারটার সময় নগরবাড়ী পৌঁছিল। আমরা দুইজনে জিনিষপত্ৰ লইয়া অতি কষ্টে তীরে নামিলাম ; কিন্তু আমাদের নৌকার কোন সন্ধানই মিলিল না। ঘাটে তিনচারিখানি নৌকা ছিল ; তাহাদের জিজ্ঞাসা করিয়াও কোন সন্ধান পাইলাম না । শান্তিদাদা বলিল, “ভাড়াটে নৌকায় গিয়ে কাজ নাই ; আজ এখানেই থাকা যাক। বাড়ীর নৌকা নিশ্চয়ই এসে পৌছিবে। বোধ হয় তারা ঝড়ে রাস্তায় আটকে গিয়েছে।” আমি শান্তিদাদার এ কথা শুনিলাম না ; আমি বলিলাম, “হঁ্যা ; বাড়ীর কাছে এসে তিনদিন ব’সে থাকি। না শান্তিদাদা, তা হবে না। তুমি নৌকা দেখ।” নিতান্ত অনিচ্ছায় শান্তিদাদা একখানি পানসী নৌকা ভাড়া করিল। নৌকার মাঝিমাল্লা সকলেই মুসলমান, সুতরাং নৌকায় রান্নার ব্যবস্থা আর করা গেল না ; আমরা সামান্য কিছু জল খাইয়া লইলাম। তাহার পর জিনিষ পত্র নৌকায় তুলিয়া দিলাম। আমরা যখন নৌকা ছাড়িলাম। তখন অপরাহ প্ৰায় তিনটা । নগরবাড়ী হইতে ক্রোশখানেক পথ যাইতে না যাইতেই পশ্চিম দিক অন্ধকার করিয়া একখানি মেঘ হঠাৎ উঠিয়া আসিল । মাঝি বলিল, “বাবুজি, ঐ ম্যাঘডার গতিক বড় ভাল ঠাকুচে না।” । এই কথা শুনিয়াই শান্তিদাদা তাড়াতাড়ি নৌকার বাহিরে গেল, আমিও তাহার সঙ্গে সঙ্গে গেলাম। শান্তিদাদা বলিল, “ও মাঝি, মেঘখানা যে বেড়ে উঠল। এখন উপায় !” মাঝি বলিল, “বায়ে “কাছাড়া, নৌকা তা রাখার ঠাই নেই। কি করি, হাওয়াও যে মুখোড় আসল।” বলিতে বলিতেই জোরে বাতাস বহিল, 8 ዓ