পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মেঘে আকাশ ছাইয়া গেল। আমরা তখনও পদ্মা ছাড়িয়া ছোট নদীতে প্রবেশ করিতে পারি নাই। পদ্মা তখন উন্মাদিনীর মত গর্জন করিয়া উঠিল, পৰ্ব্বত প্রমাণ ঢেউ উঠতে লাগিল। শান্তিদাদা আমাকে বুকের মধ্যে চাপিয়া ধরিল, আর তারস্বরে চীৎকার করিয়া বলিতে লাগিল, “মা দুৰ্গে, রক্ষা কর-রক্ষা কর মা !” মাঝিমাল্লারা অতুল বিক্রমে ঝড়ের সহিত যুদ্ধ করিতে লাগিল; কিন্তু সকলই বৃথা হইল। হঠাৎ নৌকার হাল ভাঙ্গিয়া গেল। দেখিতে দেখিতে নৌকাখানি ঘুরিয়া গেল এবং দ্রুতবেগে ঝড়ের সঙ্গে সঙ্গে ছুটতে লাগিল। শান্তিদাদা তখন চীৎকার করিয়া বলিল, “ভাই, আর না। এস।” এই বলিয়াই বৃদ্ধ আমাকে বুকে করিয়া সেই ভীষণ পদ্মার মধ্যে ঝাঁপাইয়া পড়িল । তখন আর এক বিপদ হইল। আমাদের নাকে মুখে জল যাইতেছে, নিঃশ্বাস বন্ধ হইবার মত হইতেছে, আমরা কিছুতেই জলের উপর থাকিতে পারিতেছি না। শান্তিদাদার শরীরে শক্তি কম ছিল না, আমিও খুব শক্তিমান ছিলাম। কে কাহাকে আশ্ৰয় করিবে, কে কাহার হাতে আত্মসমপণ করিবে"? শান্তিদাদাও আমাকে টানিতে লাগিল, আমিও তাহাকে টানিতে লাগিলাম। শেষে আমরা দুইজনেই অবসন্ন হইয়া পড়িলাম । তাহার পর সব অন্ধকার- ; যখন আমার জ্ঞানসঞ্চার হইল, তখন দেখিলাম আমি একটা চরের উপর পড়িয়া আছি। আমার শরীরের অধিকাংশ বালুকার মধ্যে সমাহিত রহিয়াছে! কথা বলিবার শক্তি অপহৃতপ্ৰায়! আমি সেই অবস্থাতেই মাথা তুলিয়া ডাকিলাম, “শান্তিদাদা!” তাহার পরেই আবার অজ্ঞান হইয়া পড়িলাম । গভীর রাত্ৰিতে আমার পুনরায় চেতনাসঞ্চার হইল ; আমি উঠিয়া বসি Sኳ”