পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনেক দিন পূৰ্ব্বে-সাল বলিতে পারিব না।—তবে অনেক দিন পূর্বে -আমি যখন দেশের মায়া, স্বজনগণের মমতা, কাটাইয়া নিরুদেশভ্রমণে বাহির হইয়াছিলাম, সেই সময়ের কথা বলিতেছি। আমি তখন পশ্চিমে পাহাড়ের মধ্যে থাকিতাম। মুক্তপক্ষ বিহঙ্গের মত যখন যেদিকে দুই চোক যাইত, সেই দিকেই চলিয়া যাইতাম ; বাধা দিবার কেহ ছিল না, ব্যবস্থা বন্দোবস্তের প্রয়োজন ছিল না ; কি খাইব সে ভাবনাও ছিল না। যিনি কোটী কোটী জীবজন্তুর আহার দিতেছেন, তিনিই আমাকে আহার দিয়া বঁাচাইবেন; আর তিনি যদি আহার না দেন, তাহা হইলে রাজাধিরাজ চক্ৰবৰ্ত্তীও আমাকে খাওয়াইতে পরিবেন না। ;-এই বিশ্বাস অন্ততঃ তখন আমার পূর্ণ মাত্রায় ছিল। তাই, অমন করিয়া বেড়াইতে পারিতাম, কোন ভবিষ্যতের ভাবনাই মনে উঠিত না ; সে ভাবনার ভাব না পাইয়া আমি সমস্ত ভাবনা ভূতভাবনের উপর ছাড়িয়া দিয়াছিলাম । এই রকম যখন অবস্থা, এমনই যখন মনের ভাব, সেই সময়ে চৈত্রমাসের শেষে একদিন, হরিদ্ধারে কুম্ভমেলায় স্নান করিবার জন্য, দেরাদুনের আবাসগৃহ হইতে যাত্ৰা করিয়াছিলাম। আমি যতদিন হিমালয়ের মধ্যে ছিলাম, ততদিন যখনই যেখানে থাকি না কেন, চৈত্র মাসের শেষদিনে হরিদ্ধারে যাইতাম। যাহারা আমার পরিচিত ছিলেন, তঁহাদের মধ্যে যাহারা হিন্দু, তাহারা বলিতেন। আমি মুখে যাহাঁই বলি না কেন, অন্তরে আমি ঘোর হিন্দু —তাই আমি চৈত্র-সংক্রান্তিতে হরিদ্ধারে গঙ্গাস্নান করিতে যাই। আবার যাহারা ব্ৰাহ্ম, তুহারা বলিতেন আমি হরিদ্বরে লোকারণ্য দেখিতে যাই। আমার একটি থিয়াসফিগ্ৰস্ত বন্ধু ছিলেন ; তিনি বলিতেন, আমি মহাত্মাদিগের, দর্শন করিতে যাই । আমি তখন। কাহারও কথায় সায়ও দিতাম না, প্ৰতিবাদও করিতাম না ; এখনও সে কথা বলিবার প্রয়োজন দেখি না। যে জন্যই হউক, আমি প্ৰতিবৎসর VOS