পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমি যখন সেই মন্দিরের নিকট উপস্থিত হইলাম, তখন সন্ধ্যা হইবার অধিক বিলম্ব নাই। দেখিলাম, রাস্তার পার্শ্বে যেখানে একটু স্থান আছে, সেখানেই যাত্রীরা আডিডা করিয়াছে। একজনকে জিজ্ঞাসা করিয়া জানিতে পারিলাম যে, হরিদ্বার একেবারে লোকে পূর্ণ হইয়া গিয়াছে; এখন যাহারা আসিতেছে, তাহারা রাস্তার মধ্যে, যেখানে স্থান পাইতেছে সেইখানেই, অবস্থিতি করিতেছে। আমি তখন মনে করিলাম, রাত্রিটা এই দেবালয়েই কাটাইয়া দেওয়া যাউক ; পরদিন হরিদ্ধারে গিয়া স্নানান্তর যদি কোথাও থাকিবার ব্যবস্থা ভগবান না করিয়া দেন, তাহা হইলে দেরাদুনেই ফিরিয়া যাইব । এই মনে করিয়া আমি দেবালয়-চত্বরে প্ৰবেশ করিলাম। দেখিলাম। সেখানেও অনেক হিন্দুস্থানী সপরিবারে আশ্রয় গ্ৰহণ করিয়াছেন। যে কয়খানি ঘর ছিল, তাহ যাত্রীতে পূর্ণ হইয়া গিয়াছে ; অনেকে বাগানের মধ্যে, অনাবৃত আকাশতলে আশ্রয়লাভ করিয়াই কৃতাৰ্থ হইয়াছে। আমি ধীরে ধীরে দেবালয়ের মধ্যে, মন্দিরের নিকট, উপস্থিত হইলে এক সন্ন্যাসীবেশধারী ব্যক্তি আমার দিকে অগ্রসরু হইয়া হিন্দী-ভাষায় জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনি কি এখানে " থাকিন্তে চান?” আমি বলিলাম, “ইচ্ছা ত তাই ছিল, কিন্তু এখানে যে একেবারেই স্থানাভাব দেখিতেছি!” সন্ন্যাসী বলিলেন, “হঁ, স্থানাভাব ত বটেই ; তবে আপনার জন্য একটু স্থান করিয়া দিতে পারিব। সঙ্গে কি লোক জন আছে?” আমি বলিলাম, “এক লোকনাথ ব্যতীত আর কেহ ত সঙ্গী নাই ; আর সঙ্গী মিলে নাই বাবা!”-আমার কথা শুনিয়া সন্ন্যাসী সন্তুষ্ট হইলেন ; তিনি বলিলেন, “মন্দিরের বারান্দায় আপনি আমারই সঙ্গী হইবেন।” আমি তখন তঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম।“আপনিই কি এই দেবালয়ের সেবাইত ।” তিনি বলিলেন, “সেবা তা জানি না, সেবা যে করিতে পারি তাহাও মনে হয় না ; তবে আমার উপরেই সে ভার আছে।” এই বলিয়া \98