পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৰ্ণপাত করিতাম না। ক্রমেই সে বাড়াবাড়ি আরম্ভ করিল। তাহার অত্যাচারে গরিব-লোকের স্ত্রী কন্যা লইয়া গ্রামে বাস করা অসম্ভব হইয়া উঠিল। আঠার বৎসর বয়সের ছেলে যে এমন বদ হইয়া যাইতে পারে, এ ধারণা আমার ছিল না । শেষে একদিন শুনিলাম, আমার প্রতিবেশী এক গৃহস্থের বিধবা-কন্যাকে সে পাপপথে লইয়া গিয়াছে! এতদিনও আমি সহিয়াছিলাম ; কিন্তু এ সংবাদ শুনিয়া আমি আর ক্ৰোধ সংবরণ করিতে পারিলাম না।--তাহাকে ডাকিয়া আনিয়া অনেক ভৎসনা করিলাম, দুৰ্ব্বাক্যও বলিলাম। সেই রাত্ৰিতেই সে ঐ বিধবা-মেয়েটিকে কুলের বাহির করিয়া কোথায় চলিয়া গেল ;-আমি লজ্জায়, ঘূণায় গ্রামে মুখ দেখাইতে পারিলাম না ; তাহার কোন অনুসন্ধানও করিলাম না ! কিছুদিন পরে, আর একটি হৃদয়বিদারক সংবাদ পাইলাম ; সে কথা মনে । করিতেও ঘূণা হয় ;- আমার ছেলে না কি চুরীর অপরাধে গ্রেপ্তার হইয়াছে! যে মেয়েটিকে সে কুলের বাহির করিয়া লইয়া গিয়াছিল, কিছুদিন পরে তাহাকে পরিত্যাগ করে ;-মেয়েটি বাজারে আশ্রয় লইয়াছে। হতভাগা যদি তখনও বাড়ী ফিরিয়া আসে, তাহা হইলেও হয় ;- সে তাহা করিল না, কুসঙ্গে পড়িয়া, অর্থাভাবে চুরী আরম্ভ করিয়া দিল । পুলিস তাহাকে যখন গ্রেপ্তার করে, তখন আমি সংবাদ পাই ; কিন্তু আমার তখন এমন রাগ হইয়াছিল যে, আমি তাহার উদ্ধারের জন্য চেষ্টা করিলাম না। আমি ভদ্রলোক ; দেশে আমার মানসন্ত্ৰম আছে ; জেলার উপর দশজন আমাকে জানে, চেনে ;-আমার ছেলে কি না চুরী করিল ! আমি তাহার জন্য কিছুই করিলাম না। আমার পরিবার অনেক কাদাকাটি করিলেন ; কিন্তু আমি সে হতভাগাকে কোন প্ৰকার সাহায্য করিলাম না। সে যে কাৰ্য্য করিয়াছে, তাহার উপযুক্ত দণ্ড সে ভোগ করুক। তাহার পরেই শুনিলাম, তাহার তিনমাসের জেল হইয়াছে ! 8s