পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যাই ? এই লোচনপুর গ্রামে। যদি কেহ থাকে, আসিয়া বলুক না যে, রঘু তাহার একটি কাণ কড়িও ধারে। ধার করিব কেন ? বাবা ৬৮ রামতনু বিদ্যাবাগীশ মহাশয় কি যে সে লোক ছিলেন ? এ তল্লাটে তাঁহাকে কে জানিত না, কে.চিনিত না ? তিনি যখন সজ্ঞানে গঙ্গালাভ করেন, তখন রাখিয়া গিয়াছিলেন, প্ৰায় ৭০ ঘর ব্রাহ্মণ যজমান (আমরা অশূদ্রযাজী) আর ত্ৰিশবিঘা ব্ৰহ্মোত্তর জমী, আর আমার মত ব্যাকরণ সাহিত্যে পণ্ডিত, দ্বাবিংশ বর্ষবয়স্ক আত্মজ শ্ৰীরঘুনাথ দেবশৰ্ম্মিণ: ভট্টাচাৰ্য সাহিত্যতীর্থ। আমি পরের দ্বারেই বা যাইব কেন, পরের কাছে ধারই বা করিব কেন-কি দুঃখে ? বাবা মারা গেলেন, শ্ৰাদ্ধ শান্তি হইয়া গেল ; দূরসম্পৰ্কীয় আত্মীয় বন্ধু বান্ধবগণ সপরিবারে আসিয়া আমার দায় উদ্ধার করিয়া দিয়া গেলেন-যজমানেরা বিলক্ষণ সাহায্য করিলেন। তাহার পর গ্রামে যত শুভানুধ্যায়ী ছিলেন এবং এখনও আছেন, তঁাহারা সকলেই অনুরোধ করিলেন যে, আমার এক্ষণে বিবাহ করা কীৰ্ত্তব্য, গৃহে একটি চতুষ্পাঠী প্ৰতিষ্ঠিত করা কীৰ্ত্তব্য ; তাহা হইলে স্বৰ্গীয় বিদ্যাবাগীশ মহাশয়ের যে পদ প্রসার ছিল, তাহা অচিরেই আমি অধিকার করিতে পারিব ; কেন না, আমি ইতোমধ্যেই সাহিত্যতীর্থ উপাধি ভূষিত হইয়াছি। র্তাহাদিগের এই সকল পরামর্শ সম্বন্ধে একটা বিবেচনার প্রয়োজন হইল। প্ৰথম কথা এই বুঝিলাম যে, গৃহে স্ত্রীলোক না থাকিলে ঘরদ্ধার দেখে কে, “জিনিসটা পত্তিরটার” সুব্যবস্থা করে কে, যথাসময়ে অন্ন দেয় কে ? কথাটা খুব ঠিক। তাহার পর বিবাহ করিয়া স্ত্রী গৃহে আনিলে ক্রমে সন্তানাদি হইলে, বৃহৎ পরিবার হইবে ; সুতরাং চতুষ্পাঠী স্থাপনাদি দ্বারা চারিদিকে অধ্যাপক বলিয়া খ্যাতি প্রচারের প্রয়োজন হইবে, যজমানের সংখ্যাও বৃদ্ধি করিতে হইবে। ত্রিশ বিঘা ব্ৰহ্মোত্তরে তখন আর চলিবে কেমন করিয়া ? কাযেই দুই একখানি তালুকও কিনিতে হইবে। (\9