পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গো-শালা প্রতিষ্ঠা করিব, কিন্তু পাঠশালা-চতুষ্পাঠী আমি বসাইতে পারিব না। এই সকল যখন স্থির হইল, তখন এক দিন আমার পিতার সেই ৭০ ঘর যজমানকে সংবাদ প্রেরণ করিলাম যে, অতঃপর আমার দ্বারা তঁহাদের যজনকাৰ্য্য নির্বাহিত হইবার কোন সম্ভাবনা নাই ; কারণ, আমার সম্পূর্ণ সময়াভাব, বিশেষতঃ উক্ত কাৰ্য্যে আমার সম্পূর্ণ অনাস্থা। এ অবস্থায় তাহারা যেন অন্য পুরোহিতের ব্যবস্থা করেন। এই সংবাদ প্ৰাপ্তিমাত্র গ্রামের অনেক ভদ্রলোক আমাদের গৃহে উপস্থিত হইলেন। সকলেই নানা তর্ক-বিতর্ক, প্ৰমাণ-প্ৰয়ােগের দ্বারা আমাকে বুঝাইতে চেষ্টা করিলেন যে, আমি যাহা বলিতেছি, তাহা সম্পূর্ণ অশাস্ত্রীয় ; অতএব আমি আমার পাগলামি ত্যাগ করি। আমি তঁহাদিগকে সবিনয় নিবেদন করিলাম যে, আমি যাহা বুঝিয়াছি, তাহা ঠিক ; ধৰ্ম্মের ভাণ করিয়া, আমি পাপের ভার বৃদ্ধি করিতে পারিব না ; আমার দ্বারা প্ৰকৃতপক্ষে পুরোহিতের কাব্য চলিবে না ; তবে যদি কেহ “নখ দন্ত ভাঙ্গা এক পোষা পুরোহিত” চাহেন, তাহা হইলে তিনি দেশে তাহ অসংখ্য পাইবেন,- তাহার অভাব নাই! তখন সকলে একবাক্যে সেই বৈঠকে স্থির করিলেন যে, আমার মস্তিষ্ক-বিকৃতি হইয়াছে, আমি মনুষ্য-নামের যোগ্য নাহি। তথাস্তু! যাহাঁদের মধ্যে আমাদিগের সেই ৩০ বিঘা ব্ৰহ্মোত্তর বন্দোবস্ত করা ছিল, তাহারা মনে করিল, এইবার পাগলের সম্পত্তি -তাহারা নির্বিবাদে ভোগদখল করিতে থাকিবে। কিন্তু শীঘ্রই তাহারা বুঝিতে পারিল, “রঘো পাগলার” সে দিক ঠিক আছে। ঐ ত্রিশ-বিঘা ব্রহ্মোত্তরই যে এখন আমার সম্বল; তাহাতে অযত্ন করিলে চলিবে কেন ? তখন তাহারা বলিল, আমি “সেয়ানা পাগল”, আমি আপন- গণ্ড বেশ বুঝিয়া লইতে জানি । Ø