পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বন্ধু বেশ লেখাপড়া জানিত ; কলিকাতার এক স্কুলে মাষ্টারী কিরিত ; ; মাসে মাসে কুড়ি টাকা করিয়া বাড়ীতে খরচ দিত; সর্বদা বাড়ীতে আসিত; স্বভাব-চরিত্র অতি নিৰ্ম্মল ছিল। পুত্রের প্রেরিত এই কুড়ি টাকা এবং দু-দশ ঘর শূদ্ৰ যজমানের গৃহ হইতে যাহা পাওয়া যাইত, তাহাতে হালদার মহাশয়ের সংসার বেশ চলিয়া যাইত এবং তিনি বহুকালেয়’বাৰ্ষিক দুর্গোৎসব ক্রিয়াও যথারীতি সুসম্পন্ন করিতেন। পূজার ধুমধাম ছিল না, এমন কি ঢাক ঢোল পৰ্য্যন্তও আসিত না । হালদার মহাশয় নিজেই পূজার কার্য্য নির্বাহ করিতেন। সামান্য যাহা ভোগের আয়োজন হইত তাহা গরীব দুঃখীকে বিতরণ করিয়া হালদার মহাশয় পরম আনন্দ উপভোগ করিতেন । অকস্মাৎ কি জানি কেন, দীনবন্ধু নিরুদ্দেশ্য হইল। কলিকাতা হইতে কাহাকেও কিছু না বলিয়া সে কোথায় চলিয়া গেল। এই সুদীর্ঘ সাত । বৎসরের মধ্যে তাহার কোন সংবাদ নাই। বৃদ্ধ হালদার মহাশয়ের কষ্টের অবধি নাই ; আজকালকার দিনে কি পৌরোহিত্যে কাহারও সংসার চলে ? কিন্তু বৃদ্ধ তবুও এ সাত বৎসর পূজা বন্ধ করেন নাই। : ) সারা বৎসর অতি কষ্টে যে দশ পািনর টাকা সংগ্ৰহ করিয়া রাখিতেন, তাহারই দ্বারা কোন রকমে পূজা করিতেন। আমি মধ্যে মধ্যে হালদার-বাড়ীর খোজখবর করিতাম এবং যখন যাহা সাধ্য হইত দিয়া আসিতাম। হালদার-পত্নীর দুঃখে আমার প্রাণ গালিয়া যাইত।--আর সেই সোনার প্রতিমা-র্তাহার মুখের দিকে চাহিতে পারিতাম না। সেই ব্ৰাহ্মণ-কন্যা। আশায় বুক বাধিয়া নীরবে এই সকল কষ্ট সহ্য করিতেন, শ্বশুর-শাশুড়ীর সেবা করিতেন, আর থাকিয়া থাকিয়া আকাশের দিকে চাহিয়া দীর্ঘনিঃশ্বাস ত্যাগ করিতেন । আমি যে দিনের কথা বলিতেছি, সে দিন যাইয়া দেখি, বৃদ্ধ হালদার w