পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আফিসে শিক্ষানবীশ নিযুক্ত করিয়া দেন। তাহার পরেই তিনি শীতের সময় তিন মাসের ছুটি লইয়া কলিকাতায় আসিয়া আমার একটি বিবাহ দিবার সঙ্কল্প করেন। সে সঙ্কল্প কাৰ্য্যে পরিণত হইবার পূর্বেই, পুত্ৰবধুর মুখ নিরীক্ষণ করিবার সৌভাগ্যলাভ করিবার পূর্বেই, তিন দিনের জ্বরে আমার মাতাঠাকুরাণী স্বৰ্গে চলিয়া গেলেন। আমাদের আর কলিকাতায় যাওয়া হইল না । দুৰ্ভাগ্য কখনও একাকী আইসে না। মাতার মৃত্যুর একমাস পরেই কাপড়ে আগুণ লাগিয়া আমার ছোট ভগিনী সুরমার, সৰ্ব্বশরীর দগ্ধ হইয়া গেল। চিকিৎসার ক্ৰটী হইল না ; কিন্তু তাহাকে বঁাচাইতে পারা গেল না । পাচদিন ভীষণ যন্ত্রণ ভোগ করিয়া আমার বড় আদরের ভগিনীটি মায়ের কাছে চলিয়া গেল। আমি মনে করিলাম। এইবার আমার পালা। আমি চলিয়া গেলেই বাবার বন্ধনমুক্তি-জীবনান্ত ছুটি ! আমি ভাবিলাম এক, বিধাতা স্থির করিয়া রাখিয়াছিলেন ঠিক তাহার উন্টাটি। মায়ের মৃত্যুর পর প্রায় ছয়মাস পরে একদিন আফিশ হইতে আসিয়া বাবার জ্বর হইল। এই জ্বরই তঁহার কাল হইল। - মায়ের মত তিন দিন জ্বরে ভুগিয়া তিনি আর এক লোকে চলিয়া গেলেন-আমি চিরজীবনের মৃত ছুটি পাইলাম ; আমার বলিতে কেহ থাকিল না। এ কথাটা বােধ হয় ঠিক হইল না।-আমার বাল্যবন্ধু-আমার যৌবনের সখা প্ৰতাপনারায়ণ সিং আমাকে তাহার স্নেহের বন্ধনে আবদ্ধ করিল। মনে করিয়াছিলাম, সকল বন্ধন যখন খসিয়া গেল, তখন যে কয়দিন বঁচি, সন্ন্যাস গ্ৰহণ করিয়া কাটাইয়া দিব। প্ৰতাপনারায়ণ আমাকে সে পথের পথিক হইতে দিল না। --আমি তাহারই গৃহে আশ্রয় লাভ করিলাম। বাড়ীখানি বেচিতে চাহিয়াছিলাম-প্ৰতাপনারায়ণ বেচিতে দিল না। এক ভদ্রলোক মাসিক ত্ৰিশ টাকায় বাড়ীখানি ভাড়া লইলেন। \ტNტ.