পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঐ ত্ৰিশট টাকা, আর পিতৃসঞ্চিত দুই হাজার টাকা আমার সুদীর্ঘ জীবনপথের পাথেয় হইল। " প্ৰতাপনারায়ণের পিতা যথেষ্ট নগদ টাকা ও কিছু ভূসম্পত্তি রাখিয়া গিয়াছিলেন। প্ৰতাপনারায়ণ এতদিন বাড়িতে বসিয়াই ছিল। আমি যখন তাহার আশ্রয়ে গেলাম, তখন তাহার কোন একটা কারবার করিবার ইচ্ছা হইল। তাহার এক আত্মীয় তাহাকে মধ্যপ্রদেশে তুলার কারবার করিবার পরামর্শ দিল ; তাই সে মধ্য প্রদেশের এই সহরে আসিয়া তুলার কারবার আরম্ভ করিয়াছে। আমি আর কি করিব ?-ভবঘুরে বৃত্তি আরম্ভ করিয়াছি। কখনও কানপুর, কখনও দিল্লী, কখনও এলাহাবাদ, কখনও কলিকাতায় কাটাই। ঘুরিতে ঘুরিতে যখন ক্লান্তি বোধ হয়, তখন মধ্য-প্রদেশের এই সহরে বন্ধুর প্রবাসগৃহে আসিয়া হাত পা ছড়াইয়া বিশ্রাম করি। এই সহরে সাড়ে তিনঘর বাঙ্গালী ছিলেন। ষোলআনা তিনঘর, আর আমি আধা ঘর। বাঙ্গালা দেশের সহিত বিশেষ সম্বন্ধ না থাকিলেও আমি বাঙ্গালী । জীবনের এই সুদীর্ঘকাল পশ্চিম দেশীয় লোকের সহিত কাটাইলেও এক প্ৰতাপনারায়ণ ব্যতীত হিন্দুস্থানিদিগের মধ্যে আমার আর কোনও বন্ধু ছিল না ; কিন্তু এই সহরে মধ্যে মধ্যে আসিয়া বাস করিলেও এখানকার তিনঘর বাঙ্গালী আমার পরমাত্মীয় হইয়া উঠিয়াছিলেন। কেন বলিতে পারি না,-পশ্চিমাঞ্চলে আজন্ম বৰ্দ্ধিত এই তিনঘর বাঙ্গালীর ক্রিয়াকলাপ, আমোদ আনন্দ প্ৰভৃতিতে যোগদান করিয়া আমি বড়ই তৃপ্তি অনুভব করিতাম। এই তিন বাড়ীর বাঙ্গালী বাবুদের পরিচয়-পত্ৰ লইয়া কলিকাতায় তাহদের আত্মীয়গণের গৃহে আতিথ্য গ্ৰহণ করিয়া আমি পরম সুখানুভব করিতাম। আজন্ম পশ্চিমে প্রতিপালিত হইয়াও আমি হিন্দুস্থানী হইতে পারি নাই, ܘܪ