পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অবস্থা দেখিয়া এবং তঁহারই জন্য যে, একটী স্ত্রীলোক নিজের প্রাণ বিসর্জন দিতে বসিয়াছে, এই কথা ভাবিয়া আমি বড়ই কাতর হইলাম। আর এ ব্যাপারে আমিও ত একেবারে নিরপরাধ নাহি। — যদি তাহাকে বঁাচাইতে না পারি-যদি আমাদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হইয়া যায়, তাহা হইলে কি বলিয়া মনকে প্ৰবোধ দিব ? আমার ত মনে হইলস্ত্রীলোকটী মরিয়া গেলে আমি আমাকে সম্পূর্ণ নিরপরাধ মনে করিতে পারব না। --বেশী কথা ভাবিবার তখন অবকাশ ছিল না। আমরা দুইজনে দ্রুতপদে চলিতে লাগিলাম । আমি যুবক, তিনি বৃদ্ধ-তিনি আমার সঙ্গে চলিয়া উঠিতে পরিবেন কেন ?—আমি বলিলাম, “আপনি পাছে আসুন, আমি একটু আগেই যাই।” সেই বাড়ীতে পৌছিয়া ভিতরে প্রবেশ করিতে আমার সাহসী হইল না ! কি বলিয়া মরণ-পথ-যাত্রী রমণীর সম্মুখে যাইয়া উপস্থিত হইব ? তাহার যদি তখনও জ্ঞান থাকে,-তাহার যদি তখনও কথা বলিবার শক্তি থাকে ; তাহাও হইলে সে যদি বলিয়া বসে, “আপনিই আমার মৃত্যুর কারণ”—তাহা হইলে তাহাকে আমি কি বলিব ? কেমন করিয়া তাহার সম্মুখে আমি দাড়াইয়া থাকিব ? আমি ভিতরে প্রবেশ করিতে পারিলাম না। ঘরের মধ্যে হয় ত রমণী মৃত্যু-যন্ত্রণায় ছটফট করিতেছে,-কিন্তু আমি তাহার শয্যাপার্শ্বে উপস্থিত হইবার সাহস পাইলাম না। . আমি পৌছবার দুই তিন মিনিট পরেই বামাচরণবাবু আসিয়া উপস্থিত হইলেন এবং অন্য পথ দিয়া ডাক্তারওআসিয়া পড়িলেন। তখন আমরা তিন জন রমণীর শয্যাগৃহে প্ৰবেশ করিলাম। ঘরের মধ্যে প্ৰবেশ করিয়াই স্ত্রীলোকটী যে খাটিয়ায় শয়ন করিয়া ছিল, ডাক্তার বাবু সেই খাটয়ার নিকটে গেলেন। তিনি স্ত্রীলোকটীকে দেখিবামাত্ৰই বলিলেন, “এ যে আফিং খেয়েছে।” তার পর স্ত্রীলোকটীকে