পাতা:পরিণীতা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

曾 fitfဒျူရီဂဲ(၅) গুরুচরণের দুই চােখ অশ্রুপূর্ণ হইয়া উঠিল। শেখর চুপ করিয়া রহিল। গুরুচরণ পুনরায় কহিলেন, শেখরনাথ, দেখো ত বাবা, তোমার বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে যদি এই মেয়েটার কোন গতি ক’রে দিতে পার। আজকাল অনেক ছেলে শুনেছি টাকা-কড়ির দিকে চেয়ে দেখে না, শুধু মেয়ে দেখেই পছন্দ করে । তেমনি যদি দৈবাৎ একটি মিলে যায় শেখর, তা হ’লে বলচি আমি, আমার আশীৰ্ব্বাদে তুমি রাজা হবে। আর কি বলব বাবা, এ-পাড়ায় তোমাদেরই আশ্রয়ে আমি আছি, তোমার বাবা আমাকে ছোট ভায়ের মতই দেখেন । শেখর মাথা নাড়িয়া বলিল, আচ্ছা তা দেখব । গুরুচরণ বলিলেন, ভুলো না বাবা, দেখো ; ললিতা ত আটবছর বয়স থেকে তোমার কাছেই লেখা-পড়া শিখে মানুষ হচ্চে, তুমিও ত দেখতে পােচ্ছ, ও কেমন বুদ্ধিমতী, কেমন শিষ্টশান্ত । একফোটা মেয়ে, আজ থেকে ওই আমাদের রাধাবাড়া করবে, দেবে। থোবে, সমস্তই এখন ওর মাথায় । এই সময়ে ললিতা একটিবার চোখ তুলিয়াই নামাইয়া ফেলিল। তাহার ওষ্ঠ্যাধরের উভয় প্রান্ত ঈষৎ প্রসারিত হইল মাত্ৰ। গুরুচরণ একটা নিশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন, ওর বাপাই কি কিছু কম রোজগার করেচে, কিন্তু সমস্তই এমন ক’রে দান ক’রে গেল যে, এই একটা মেয়ের জন্যেও কিছু রেখে গেল না । শেখর চুপ করিয়া রহিল, গুরুচরণ নিজেই আবার বলিয়া উঠিলেন, আর রেখে গেল নাই বা বলি কি ক’রে ? সে যত লোকের যত দুঃখ ঘুচিয়েছে, তার সমস্ত ফলটুকুই আমার এই মা-টিকে দিয়ে গেছে, তা নইলে কি এতটুকু মেয়ে এমন অন্নপূর্ণ হতে পারে। তুমিই বল না শেখর, সত্য কি না ? শেখর হাসিতে লাগিল, জবাব দিল না ।