ভারতে উৎসব । ১৩৭ বহু তপস্যার ফলে, বহু যাগ-যজ্ঞের ফলে, বহু শিক্ষা-দীক্ষার ফলে, বহু যোগ-সমাধির বলে, বহু ধ্যান-ধারণার কৌশলে বুঝিয়াছেন মে, কঁাদিতে কঁাদিতে হাসি কেমন করিয়া আসে, ঘোরঅন্ধকার মধ্যে আলোকের বিজলী কেমন করিয়া চমকিয়া উঠে, গ্রীষ্মের দুঃসহ তাপ ভোগ করিতে করিতে বর্ষার শীতল বারি-ধারার কেমন করিয়া বৃষ্টি হইয়া থাকে। স্থদুরদর্শী ভারতবর্ষ জ্ঞান-বিজ্ঞান-সাগরের অগাধ শীতলতাময় গুহ্য গর্ভে প্রবিষ্ট হইয়া দেখিয়াছেন যে, জলধির অতল তলে মুক্তিকার গর্ভ মধ্যে মুক্তা কেমন কুরিয়া লুকাইয়। থাকে। অন্য দেশের লোক স্বফল পাইলে তবে ভগবানের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, কিন্তু ভগবদ্ভক্ত ভারতবর্ষ স্বফল পাইবার পূর্বেই ভগবানের পূজা মানিয়া থাকে। অন্য দেশে ফল পাইলে পূজা, ভারতবর্ষে আগে পূজা, পরে ফল। প্রেম-রাজ্যের ইহাই পদ্ধতি । যেমন অগ্নি-কণিকার স্পৰ্শমাত্ৰে,ভূণরাশি বিদগ্ধ হইয়া যায়, সেইরূপ পুঞ্জায়মান নিরানন্দ-কুঞ্জের মধ্যে আনন্দ-উৎসবের একটী জ্বলন্ত কণিকা পতিত হইলে নিরানন্দ-রাশি চিরদিনের জন্য তিরোহিত হইয়া যায়। প্রবল দুঃখ-দাব-দাহ-শিখা নিবাইবার জন্যই ভারতে ধৰ্ম্মের এই উৎসবরূপ উৎস উৎসারিত হইয়াছে। নিরানন্দের কালিঝুলিমাখ। ভারতবর্ষ তাই এই উৎসবের নিৰ্ম্মল জলে আনন্দের প্রবাহে অবগাহন করিতে আসিয়ছে। সং যাহা, তাহা কিঞ্চিম্মাত্রায় ও লব্ধ হইলে অশেষ অস রোশিকে নিঃশেষিত করিতে পারে । সভ্যগণ ! এই সময় একটী হাসির গল্প মনে পড়িল ।
পাতা:পরিব্রাজকের বক্তৃতা.djvu/১৪৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।