পরিব্রাজকের বক্তৃতা। سbسbو হইয়াছে ত ? ফকীর উত্তর করিলেন যে, আমি জন্মের মধ্যে কখনও এরূপ অমুখের আহার করি নাই। তোমার সমস্ত সামগ্রীই অতি স্বরভিযুক্ত, স্বরস, ও উপাদেয় হইয়াছিল। আমি যে সামগ্ৰীটাই মুখে দিই, সেইটাই মুখসেবা জানিয়া যেই আর একবার খাইব মনে করি, অমনি তোমার পাচক তৎক্ষণাৎ সেই পাত্ৰটী উঠাইয়া লইয়া যায়। সুতরাং সাধ মিটাইয়া, প্রাণ ভরিয়া, কোন সামগ্রীই খাইতে পাই নাই। আমার পেট ভরিয়াছে, ক্ষুধা ভাঙ্গিয়াছে, কিন্তু খাইবার সাধ’মিটে মাই, খাইয়া তৃপ্তি বোধ করি নাই, অথবা খাওয়া হয় নাই বলিলেও হয়। সাধুহৃদয় সভ্যমহোদয়গণ অনাদ্য শক্তির পরিণামাভিমুখী বিপুল বিঘুর্ণনে, ফকীরের ভোজনে অতৃপ্তির ন্যায়, চক্ষুর দর্শন-তৃপ্তি কোন কালেই হয় না, অথবা যথাযথ দেখাই হয় না বলিলেও হয় । অন্ধকারে আচ্ছন্ন স্থাণুকে দূর হইতে যেমন পিশাচবং দেখায়, তেমনি মায়া-কুজৰাটিকায় আচ্ছন্ন সমস্ত পদার্থই এককে আর বলিয়া বোধ হয়। বাজীকরের অঙ্গুলির উপর ঘূর্ণায়মান একখানি থাল অতি বিঘুর্ণিত হইলে, উহা যেমন একটা রেখা ব্যতীত আর কিছুই বলিয়া বোধ হয় না, সেইরূপ এই মায়াজাল বিস্তারকারী ব্রহ্মাণ্ডের বাহ্যাভাত্তরচারী বিরাট ঐন্দজালিকের অঙ্গুলির অগ্রভাগে যে পরিণাম-চক্র বিপুলবেগে বিঘূর্ণিত হইতেছে, তাহাতে কোন বস্তুরই যথাযথ স্বরূপ কাহারও চক্ষুর গোচরীভূত হইতে পারে না। বিদ্যুতের ক্ষণবিকাশে যেমন চক্ষুর তৃপ্তি হয় না, সেইরূপ অনবরত পরিবর্তনবিপৰ্য্যয়গ্ৰস্ত পদার্থ-দর্শনেও নয়নের তৃপ্তি সাধিত হয় না ।
পাতা:পরিব্রাজকের বক্তৃতা.djvu/১৯৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।