পাতা:পরিব্রাজকের বক্তৃতা.djvu/২৪০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।



অন্ধের যষ্টি।
২২৯

উঠিল; বলিলেন, বালক! অন্ধ আমি, সে পবিত্র ধামে কিরূপে যাইব, কে আমাকে লইয়া যাইবে? বালক হাসিয়া বলিল বিল্বমঙ্গল! আমি তোমাকে লইয়া যাইব, ভাবনা কি? বিল্বমঙ্গল বলিলেন, বালক! তুমি কি সে স্থান চেন? সেই সূদুর স্থানে কেমন করিয়া লইয়া যাইবে? বালক আবার হাসিয়া বলিল, আমি ত সেখানে অনেক দিন ছিলাম, আমার বাপ মা সেখানে ছিলেন, আমি সেখানেও গোরু চরাইতাম। বিল্বমঙ্গল বলিলেন, তবে আমাকে কবে লইয়া যাইবে? বালক বলিল এখনই চল। আপনার হস্তের যষ্টি গাছটীর অগ্রভাব বিল্বমঙ্গলের হস্তে দিয়া বলিল, এই ধর, এই যষ্টি ধরিয়া আমি তোমাকে বৃন্দাবন লইয়া যাইতেছি। মুহূর্ত্ত অতীত হইতে না হইতে বালক বলিল, বিল্বমঙ্গল! এই ত বৃন্দাবনে আসিয়াছ, এই ত যমুনাতটে দাড়াইয়াছ। অন্ধ বিল্বমঙ্গল কিছুই বুঝিতে পারিলেন না, কিছুই দেখিতে পাইলেন না, কাতরে প্রেমের স্বরে গাহিতে লাগিলেন—

যমুনে! এই কি তুমি সেই যমুনা প্রবাহিণী।
ও তোর বিমল তটে, রূপের হাটে, বিকাতো নীলকান্তমণি॥
কোথা সে ব্রজের শোভা, গোলক হ’তেও মনোলোভা,
কোথা শ্রীদাম, বলরাম, সুবোল, সুদাম;—
কোথা সে সুনীলতনুর ধেনু, বেণু, মা যশোদা রোহিণী॥
কোথা নন্দ উপানন্দ, মা যশোদার প্রাণ গোবিন্দ,
ধরা-চূড়া-পরা কোথা নদী-চোরা;–
কোথা সে বসন-চুরি, ব্রজ নারীর পূজিতা মা কাত্যায়নী॥