ভারতের মূর্ছাভঙ্গ । ২৩ বুকিয়াছিলেন, এখন পর্ধ্যস্ত পৃথিবীর কোন জাতি তত খানি বুঝিতে পারেন নাই। মনের ভাব প্রকাশ করিবার জন্য শব্দনাদ শরীর-যন্ত্রের যেখান হইতে যাহ উদ্গত হইতে পারে, আর্ধ্যজাতি তাহার বিশেষ তথ্য অনুসন্ধান করিয়াছিলেন। তাই তাহাদিগের দেব-ভাষা-সংস্কৃত ভাষার পূর্ণত সাধনে পঞ্চাশটা বর্ণ আবিষ্কৃত ও নির্দিষ্ট হইয়াছে। উচ্চারণগুণে, স্বর-বিন্যাস-গুণে, এক শব্দই মনের নানা ভাব-ব্যঞ্জক হইয়া থাকে। ভারতবর্ষ ভাব ও কবিত্বের.দেশ ; ভাবুক ও কবি এ দেশে যত জন্মিয়াছেন, এরূপ আর কোন দেশে দেখিতে পাওয়া যায় না । ভরত, হনুমান, দামোদর, সোম, পবন, নারায়ণ প্রভৃতি সঙ্গীত-গ্রন্থের প্রধান প্রধান লেখক ছিলেন । যখন দেশে কোন প্রকার রাজ্যবিপ্লব, জুর্ভিক্ষ, ' শোকতাপাদিজনক ঘটনাবলীর প্রাচুর্য না থাকে ; যখন লোক সকলকে দুর্ভাবনা ও কায়ক্লেশে বিত্রত হইতে না হয় ; অর্থাৎ যখন লোক-সমূহ কুশল পূর্বক জীবন-যাত্রা নির্বাহ করিতে থাকে ; সেই সময়েই সঙ্গী ত-বিদ্যার বিশেষ চর্চা ও উন্নতি হয়। ভারতের দিন দিন অধঃপতনের সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গীত মুচ্ছ নারও মুচ্ছৰ্ণ-দশা আসিয়া পড়িয়াছে। বেদই ভারতের আপৌরুষেয় মহা শাস্ত্র । ভগবান শ্ৰীকৃষ্ণ গীতায় এই বেদরাশির মধ্যে যে সামবেদকে নিজ বিভূতি বলিয়া ব্যাখ্যা করিয়াছেন, সেই সামবেদ সঙ্গীত-বিদ্যার পূর্ণ পরিচয় । সঙ্গীত-বিদ্যার পূর্ণ প্রাদুর্ভাবে, গন্ধৰ্ব্ব-বিদ্যার পূর্ণ প্রচারে দুেব-লোক পৰ্য্যন্ত আমোদিত হইত। দেবর্ষি নারদের বীণাতন্ত্রী-বাদ্যসহ হরিগুণ-সঙ্গীতে ত্রিলোক বিমোহিত হইত।
পাতা:পরিব্রাজকের বক্তৃতা.djvu/৩৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।